মেয়র মান্নান আরো এক মামলায় গ্রেপ্তার

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের (জিসিসি) বরখাস্ত হওয়া মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ মান্নানকে জয়দেবপুর থানার নাশকতার আরো একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ নিয়ে তাঁকে মোট ১৭ টি মামলার গ্রেপ্তার দেখানো হলো।
আজ সোমবার গাজীপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে শুনানি শেষে বিচারক মনোয়ারা বেগম তাঁকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।
গাজীপুর আদালতের পরিদর্শক মো. রবিউল ইসলাম জানান, চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি দিবাগত রাতে বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ চলাকালে গাজীপুর মহানগরের মোগরখাল এলাকার পানির ট্যাঙ্কির সামনে ঢাকা-চট্টগ্রাম বাইপাস সড়কে একটি কাভার্ড ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় সহকারী উপপরিদর্শক আব্দুস ছালাম বাদী হয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ছয়জন কাউন্সিলরসহ বিএনপি-জামায়াতের ৭৪ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে জয়দেবপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে ওই মামলার তদন্তে অধ্যাপক এম এ মান্নানের ইন্ধনে, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্ররোচনায় আসামিরা ওই গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে এমন অভিযোগ আনেন তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মোবারক হোসেন।
এই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য গতকাল রোববার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ শুনানি শেষে গাজীপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মনোয়ারা বেগম আবেদন মঞ্জুর করে অধ্যাপক এম এ মান্নানকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেন। এ নিয়ে অধ্যাপক এম এ মান্নানকে মোট ১৭টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
অধ্যাপক এম এ মান্নানের আইনজীবী মঞ্জুর মোর্শেদ প্রিন্স জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বরখাস্তকৃত মেয়র মান্নানের বিরুদ্ধে এ মামলাসহ ১৭টি মামলা রয়েছে। এসব মামলার মধ্যে সবশেষ গতকাল পর্যন্ত ১৬টি মামলায় জামিন পান তিনি। উচ্চ আদালতে সবকটি মামলায় জামিন পাওয়ার পর অন্যায়ভাবে তাঁকে আরো একটি নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আইনজীবী।
চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে গাজীপুরের সার্ডি গেইট এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা হামলার মামলায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাজধানীর বারিধারা ডিওএইচএসের নিজ বাসা থেকে অধ্যাপক এম এ মান্নানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারপর থেকে তিনি বন্দী রয়েছেন। এ পর্যন্ত ১৭টি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এসব মামলার প্রায় সবই বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অবরোধ ও হরতালকালে গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নি সংযোগ, হত্যা, নাশকতা, বিস্ফোরক ও পুলিশের সরকারি কাজে বাধা দানসহ বিভিন্ন আইনে দায়ের করা হয়েছে।
এম এ মান্নানের অবর্তমানে গত ৮ মার্চ থেকে প্যানেল মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
গত ১৯ আগস্ট স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের (সিটি করপোরেশন-২ শাখা) সহকারী সচিব এ কে এম আনিছুজ্জামানের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানকে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ (২০০৯ সালের ৬০ নং আইন)-এর ধারা ১২-এর উপধারা (১) মোতাবেক বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত নাশকতার মামলার অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হওয়ায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।