‘জবানবন্দি’ দিতে মতিনকে তিন ঘণ্টা সময় দেওয়া হলো

ঢাকায় ইতালির নাগরিক চেসারে তাভেলা হত্যায় জড়িত সন্দেহে বিএনপি নেতা এম এ কাইয়ুমের ছোট ভাই এম এ মতিনকে আদালতে নেওয়া হয়েছে। এ মুহূর্তে তাঁকে রাখা রয়েছে বিচারকের খাস কামরায়। সংশ্লিষ্ট আদালতের জেনারেল রেকর্ডিং অফিসার (জিআরও) জানান, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে মতিনকে তিন ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছে। এই সময় শুরু হয়েছে দুপুর পৌনে ২টার দিকে।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম শাহরিয়ার মাহমুদ আদনানের আদালতে মতিনকে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক জেহাদ হোসেন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করতে আদালতের কাছে আবেদন জানান।
জিআরও এসআই ফরিদ মিয়া জানিয়েছেন, মতিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে পারেন। তাঁকে আইন অনুযায়ী ভাবার জন্য তিন ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। পরে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে চাইলে ঢাকা মহানগর হাকিম শাহরিয়ার মাহমুদ আদনান তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করবেন। বিচারকের খাস কামরায় তাঁকে রাখা হয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার মতিনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠান ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালত। এ ছাড়া গত ৫ নভেম্বর তাঁকে হাকিম শাহরিয়ার মাহমুদ আদনান আট দিনের রিমান্ডে পাঠান।
গত ৪ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় বেনাপোলের বড় আঁচড়া সীমান্ত থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান জানান, গত ৪ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে মতিন বড় আঁচড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এ নিয়ে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
গত ২৮ অক্টোবর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানান, বিএনপির সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার কাইয়ুম ইতালির নাগরিক হত্যার সন্দেহভাজন পরিকল্পনাকারী। তাঁর নির্দেশ ও পরিকল্পনায় তাভেলাকে হত্যা করা হয়েছে বলে সন্দেহ করেন মন্ত্রী।
তবে পরদিন বিএনপি নেতা কাইয়ুম বিবিসির কাছে দাবি করেন, ইতালির নাগরিক হত্যাকাণ্ডে তাঁকে বলির পাঁঠা বানানো হচ্ছে।
এদিকে, ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মুনতাসিরুল ইসলাম বলেন, তাভেলা হত্যায় গ্রেপ্তার মিনহাজুল আরেফিন রাসেল ওরফে ভাগ্নে রাসেলের আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে মতিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাতেই তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কূটনৈতিকপাড়া গুলশানে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন ইতালির নাগরিক চেসারে তাভেলা। হত্যাকাণ্ডের প্রায় এক মাস পর গত ২৬ অক্টোবর এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানান পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা।
ভাগ্নে রাসেল ছাড়া ওই সময় গ্রেপ্তার অন্য তিনজন হলেন রাসেল চৌধুরী ওরফে চাক্কি রাসেল, শুটার রুবেল ও শাখাওয়াত হোসেন ওরফে শরীফ। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে চাক্কি রাসেল ছাড়া বাকি তিনজন এরই মধ্যে হত্যাকাণ্ডে ‘দোষ স্বীকার’ করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
৫০ বছর বয়সী নিহত তাভেলা ছিলেন নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আইসিসিও কো-অপারেশনের ‘প্রফিটেবল অপরচুনিটিজ ফর ফুড সিকিউরিটি’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক।