মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী রেখে বিল, ‘তাড়াহুড়া’ করে পাস

পৌরসভার মেয়র পদে দলীয় মনোনয়নে নির্বাচনের বিধান রেখে অধ্যাদেশকে আইনে রূপ দিতে ‘স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধন) আইন, ২০১৫’ বিলটি জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে তাড়াহুড়া করে বিলটি পাস করার সমালোচনা করেন জাতীয় পার্টির ও স্বতন্ত্র সদস্যরা।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে দশম জাতীয় সংসদের অষ্টম অধিবেশনে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলটির ওপর আনীত সংশোধনীসহ জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
তবে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম, পীর ফজলুর রহমান, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজি মো. সেলিম, ডা. রুস্তম আলী ফরাজী ও নূরুল ইসলাম ওমরকে সংসদে বক্তব্য রাখার সুযোগ দিলে তাঁরা এভাবে তাড়াহুড়া করে বিলটি পাস করার সমালোচনা করেন।
গত ৮ নভেম্বর সংসদের চলতি অধিবেশন শুরুর দিন পৌরসভা নির্বাচন সম্পকির্ত অধ্যাদেশটি সংসদে উত্থাপন করা হয়েছিল। অধ্যাদেশে পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর সবাইকে দলীয় মনোনয়নে ও স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার বিধান রাখা হয়েছিল। পরে গত ১৫ নভেম্বর অধ্যাদেশটি আইনে রূপ দিতে সংসদে উত্থাপিত বিলে দলীয় প্রার্থী হিসেবে কাউন্সিলরদের বাদ দিতে প্রস্তাব করা হয়।
বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তিনদিনের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য স্থানয়ী সরকার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হলে কমিটি শব্দগত একটি সংশোধনী যুক্ত করে বিলটি চূড়ান্ত করে গতকাল বুধবার সংসদে দেয়।
তার আগে সিটি করপোরেশন, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা ও জেলা পরিষদে রাজনৈতিক দলের প্রার্থী মনোনয়নের বিধানের প্রস্তাব সংবলিত পৃথক চারটি সংশোধনী বিল গত ১১ নভেম্বর সংসদে উত্থাপিত হয়। এর মধ্যে জেলা পরিষদ সম্পর্কিত সংশোধনী বিলটি সংসদ থেকে প্রত্যাহার করা হয়। গতকাল বুধবার সংসদীয় কমিটি শুধু মেয়র ও চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়নের বিধান রেখে বিলগুলো চূড়ান্ত করে সংসদে প্রতিবেদন দেয়।
পৌরসভা সংশোধন বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ হতে সরাসরি অংশগ্রহণে স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্পন্ন করার দাবি উত্থাপিত হয়ে আসছে। জনগণের গণতান্ত্রিক এই প্রত্যাশার প্রতি গুরুত্ব প্রদান করে রাজনৈতিক দলসগুলোর সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে দলীয়ভাবে মনোনীত প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন।
‘এতে প্রার্থীদের দায়বদ্ধতা সৃষ্টি হবে এবং যথাযথভাবে রাজনৈতিক অঙ্গীকার পালনের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
এতে আরো বলা হয়, স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইনে মেয়র পদে নির্বাচনে প্রার্থীতার জন্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থী মনোনয়নের সুযোগ নেই। এজন্য রাজনৈতিক দল মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার বিধান সংযোজন প্রয়োজন।