ভারত যাচ্ছেন কুড়িগ্রাম ছিটমহলের ৭২ জন

আগামীকাল রোববার ভারত যাচ্ছেন কুড়িগ্রামের ভেতরে সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলের ১৬ পরিবারের ৭২ জন বাসিন্দা। এর মধ্যে ফুলবাড়ী উপজেলার ১০টি পরিবারের ৪৯ জন ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ছয়টি পরিবারের ২৩ জন ভারতে যাওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সূত্রে জানা গেছে, জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলার বাঘভাণ্ডার সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাবেন তাঁরা।
ভারতের নাগরিকত্ব নেওয়া এসব বাসিন্দার ভারতে যাওয়া নির্বিঘ্ন করতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জেলা প্রশাসন।
কুড়িগ্রাম জেলার ভেতরের ১২টি বিলুপ্ত ছিটমহলের ভারতে বসবাস করতে চাওয়া নাগরিকদের মধ্যে ২২ নভেম্বর প্রথম দফায় ভারত যাবেন ফুলবাড়ী উপজেলার দাসিয়ারছড়ার ১০ পরিবারের ৪৯ জন ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার গাড়োলঝাড় সাবেক ছিটের ছয় পরিবারের ২৩ জন। ২৪ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় ভারত যাবেন দাসিয়ারছড়ার ৩০ পরিবারের ১১৫ জন ও তৃতীয় দফায় ভারত যাবেন দাসিয়ারছড়ার ২৭ পরিবারের ৭৮ জন।
ভারতে নাগরিকত্ব নিয়ে দেশত্যাগ করতে যাওয়া এসব বাসিন্দাদের অনেকেই জানান, জন্মভূমি, আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীর মায়া ত্যাগ করে ভারতে যাওয়ার ইচ্ছে না থাকলেও স্বামী ও আপনজনদের টানে যেতে হচ্ছে অনেককেই। বিলুপ্ত দাসিয়ারছড়া ছিটমহলের বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ‘যেহেতু আমরা ভারতীয় ছিটমহলের নাগরিক ছিলাম, সেহেতু ছিট বিনিময়ের পর আমরা ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তা ছাড়া ৬৮ বছর পর নিজ দেশের নাগরিকত্বের সুযোগসুবিধা পাব। পাশাপাশি ভারত সরকার আমাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে এটা আশা করছি। জন্মভূমি, আত্মীয়স্বজনের মায়া ত্যাগ করে ভারতে যেতে কষ্ট হলেও বাস্তবতাকে মেনে নিতে হবে।’
বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘শেষ বয়সে স্বজন দেশান্তরিত হওয়ার ব্যথায় ব্যথিত হলেও অনেককে মেনে নিতে হচ্ছে এ কঠিন বাস্তবতা। তবু আমাদের দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর ছিটমহল বিনিময় হয়েছে। আমরা মুক্ত হয়েছি। আমরা আশা করি ভারতের নাগরিকত্ব নেওয়া মানুষ যেন সেখানে সুখে থাকতে পারে।’
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন জানান, কুড়িগ্রামের অভ্যন্তরের বিলুপ্ত ১২টি ছিটের ৩০৫ জন বাসিন্দা প্রথম অবস্থায় ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও শেষ পর্যন্ত ভারতে যাচ্ছেন শুধু দুটি ছিটমহলের ২৬৫ জন। এসব বাসিন্দাদের নির্বিঘ্নে ভারত যাওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। বিলুপ্ত ছিটমহল থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ গাড়িতে করে ভুরুঙ্গামারী উপজেলার বাঘভাণ্ডার সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান থেকেই নতুন গন্তব্য ভারতে যাবেন এসব বাসিন্দা।