নড়িয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা

শরীয়তপুরের নড়িয়া পৌরসভা নির্বাচনে দুই মেয়র পদপ্রার্থী সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী হায়দার আলী ও স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থী শহীদুল ইসলাম রোববার সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটানো ও কারচুপির শঙ্কা প্রকাশ করেন।
শনিবার রাতে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী হায়দার আলীর বাড়িতে বোমা ও গুলি বর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তাঁর সমর্থক মধু ঋষির বাড়িতে দুটি ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
ওই বাড়ির বাসিন্দা দীনেশ ঋষি বলেন, ‘রাত ৯টার দিকে দুর্বৃত্তরা আমাদের দুটি ঘরে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। তখন বাড়ির পুরুষ সদস্যরা মেয়রের বাড়িতে ছিলাম। এলাকার মানুষ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।’
সূত্র জানায়, নড়িয়া পৌরসভায় বর্তমান মেয়র হায়দার আলী আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র পদপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন পৌরসভা আওয়ামী লীগের সদস্য শহীদুল ইসলাম।
আজ দুপুর ২টার দিকে স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থী শহীদুল ইসলাম পৌরসভা চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি অভিযোগ করেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য শওকত আলী এলাকায় অবস্থান করছেন। তিনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার কাজ চালাচ্ছেন। নড়িয়ার নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন।
শহীদুল ইসলাম আরো বলেন, ‘মেয়র পদপ্রার্থী হায়দার আলীর সমর্থকদের হামলায় আমার ১৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে নড়িয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে না।’
এরপর বিকেল ৪টার দিকে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী হায়দার আলী তাঁর কলুকাঠির বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি অভিযোগ করেন, স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থী শহীদুল ইসলাম সন্ত্রাসীদের দিয়ে শনিবার রাতে তাঁর বাসভবনে বোমা হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা তাঁর ও পরিবারের সদস্যদের জীবননাশের জন্য গুলি চালায়। ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য একটি হিন্দু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। পুলিশ আমাদের কোনো সহযোগিতা করছে না। শহীদুল ইসলামের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধ করা না হলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।’
নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান খোকন বলেন, স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থীর পিছনে নড়িয়ার এক প্রভাবশাশী ব্যক্তি কলকাঠি নাড়ছেন। তাঁরা আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারানোর জন্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। সহিংস পরিস্থিতি তৈরি করে তাঁরা ভোট ডাকাতির পরিকল্পনা করছেন। নড়িয়ার সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠান নিয়ে আমরা শঙ্কায় আছি।’
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী বলেন, নড়িয়ার পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শনিবারের ঘটনায় দুই পক্ষ দুটি মামলা দায়ের করেছেন।
শরীয়তপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য শওকত আলী বলেন, ‘আমি ভোট দেওয়ার জন্য বাড়িতে এসেছি। বাড়ির থেকে কোথাও বের হচ্ছি না। কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছি না। যাঁরা অভিযোগ করেছেন, তাঁরা আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য এমন কথা প্রচার করছেন।’