‘যার জন্য করি চুরি, সেই বলে চোর’

সারা দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের ধারাবাহিকতাতেই ঢাকায় মেট্রোরেল চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি আরো বলেন, সরকার ইচ্ছে করেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেট্রোরেলের একটি স্টেশন রেখেছে। এ নিয়ে আন্দোলন অযৌক্তিক।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় দলের সভাপতি শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উত্তরা থেকে মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যে মেট্রোরেলে যাতায়াত করা যাবে। এর ১৬টি স্টেশন। আমরা ইচ্ছে করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্টেশন রেখেছি। উত্তরা, মিরপুর থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অল্প সময়ে এসে ক্লাস করে আবার ফিরে যেতে পারবে। আধুনিক পদ্ধতিতে হবে এটা। আকাশ পথে যাবে। এর জন্য যেখানে যেখানে সাউন্ড প্রুফ করা দরকার তাই করা হবে।’
‘আমি দেখলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র-শিক্ষক এই মেট্রোরেলের স্টেশনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমে পড়েছে। তাদের প্রশ্ন, মেট্রোরেল এখান দিয়ে যাবে কেন?’urgentPhoto
এ সময় প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন, ‘যার জন্য করি চুরি সেই বলে চোর।’ তিনি বলেন, ‘যাদের সুবিধার জন্য মেট্রোরেল করলাম... এখানে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, বারডেম, বাংলা একাডেমি এখানকার সবাই নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবে। অল্প সময়ে যানজটমুক্ত চলাচল করার জন্যই এই সুযোগ সৃষ্টি করা। সেখানে কেন আন্দোলন?’
আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় ফুলবাড়ীতে রেল স্টেশন ছিল। এখন যেটা রেলভবন সেখানেই ছিল রেল স্টেশন। রেলগাড়ি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, পলাশী, হাতিরপুল হয়ে যাতায়াত করত। রেল স্টেশনের কাছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করাই হয়েছিল, যাতে ছাত্র-শিক্ষকরা সহজে যাতায়াত করতে পারে।’
‘বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর দিয়ে রেললাইন আছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর দিয়ে রেললাইন আছে। রেললাইন পৃথিবীর কোথায় নেই। হঠাৎ এটা নিয়ে এত উত্তেজিত হওয়ার কি আছে আমি তো বুঝে পাই না। আজকে যানজটে আটকা পড়ে থাকবে, নাকি মেট্রোরেলে সাঁই সাঁই করে আসবে ক্লাস করে বাড়ি ফিরে যাবে। সুবিধা শিক্ষার্থীদের, সেটা বুঝতে হবে। অবশ্য বাংলাদেশে এক শ্রেণির লোক আছে, যাই করতে যাই, একটা ‘কিন্তু’ বের করে আন্দোলন শুরু করে দেয়।”
এ সময় প্রধানমন্ত্রী রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে যারা আন্দোলন করছে, তাদেরও সমালোচনা করেন।
জনসভাস্থলে রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আসতে শুরু করেন। ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে জনসভাস্থল পূর্ণ হয়ে যায় নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে।
পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে ফেরেন। এই দিনটির স্মরণে রোববার আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। ওই দিন ইজতেমার আখেরি মোনাজাত থাকায় আজ জনসভা করেছে আওয়ামী লীগ।