কিশোরীদের উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ, ঋষিপল্লীতে ভাঙচুর

তিন কিশোরীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় যশোরের মণিরামপুর উপজেলার দূর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নের পাড়ালা ঋষিপল্লীতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। অভিযোগ উঠেছে, দুর্বৃত্তদের নেতৃত্ব দিয়েছেন স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা। আজ শনিবার ঘটা এ ঘটনায় ১৫ জন আহত হয়েছে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও কাউকে আটক করতে পারেনি।
মণিরামপুর উপজেলার নেহালপুর ফাঁড়ির উপপরিদর্শক আবদুর রাকিব জানান, ঋষিপল্লীর তিন কিশোরীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় ঋষিপল্লীতে হামলা করে দুর্বৃত্তরা। তিন কিশোরী স্থানীয় সাতগাতী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। দোষীদের আটকের জন্য এলাকায় অভিযান চলছে বলে তিনি জানান।
কিশোরীদের একজন জানায়, স্কুলে যাওয়ার পথে বেশ কিছুদিন ধরে তাদের উত্ত্যক্ত করছিল বাহির ঘরিয়া গ্রামের ইব্রাহিম হোসেন, পাড়ালা গ্রামের মামুন ও তার বন্ধু রিমন। এ ব্যাপারে তারা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করে।
প্রধান শিক্ষক বিমল কুমার জানান, অভিযোগের পর বুধবার বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির জরুরি সভায় এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে ইব্রাহিমসহ তার বন্ধুরা ক্ষুব্ধ হয়। বুধবার স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ইব্রাহিম ও তার সহযোগীরা কিশোরীদের ধাওয়া করে।
কিশোরীদের একজনের স্বজন গোবিন্দ দাস অভিযোগ করেন, ওই ঘটনার প্রতিবাদ করায় শনিবার দুপুর ২টার দিকে দূর্বাডাঙ্গা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আবু সাঈদ ও ইব্রাহিমের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন সন্ত্রাসী লাঠিসোটা, রড ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঋষিপল্লীতে মুকুন্দ ও তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমাকে মারধর করতে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দিলে তাঁদের ওপরও চড়াও হয় দুর্বৃত্তরা। তাদের এলোপাতাড়ি মারধরে ওই পল্লীর গোবিন্দ দাস, মুকুন্দ দাস, জিতেন্দ্র দাস, পূর্ণিমা দিসা, জয়দেব দাস, সকালী রানী দাস, অধীর দাস, নীল কুমার দাসসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে গোবিন্দ, মুকুন্দ ও নীলপদ দাসের ঘরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন আগুন নিয়ন্ত্রণ করে আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
তবে এ হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আবু সাঈদ বলেন, ‘আমি সন্ত্রাসীদের বাধা দিয়েছি।’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সেলিম হোসেন বলেন, ‘আমি গিয়ে কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে হয়েছে বলে দেখেছি, তবে ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তা জানতে পারিনি।’
প্রত্যক্ষদর্শী গীর বালা দাস জানান, দুর্বৃত্তদের হাত থেকে রান্না ঘরের হাঁড়ি-পাতিলও রেহাই পায়নি। মিনতি দাস জানান, দুর্বৃত্তরা চলে যাওয়ার সময় শাসিয়ে যায়, এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করলে আবার হামলা করা হবে।
মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাহেরুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।