এরপর কার্যতালিকায় সোবহান, আজহার
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাসেম আলীর চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এবার মামলার কার্যতালিকা অনুযায়ী পরের নম্বরে রয়েছেন দলটির আরো দুই কেন্দ্রীয় নেতা। তাঁরা হলেন দলের নায়েবে আমির মাওলানা আবদুস সুবহান ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম।
চলতি বছরে দলটির এ দুই নেতার শুনানি শুরু হয়ে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হতে পারে। মীর কাসেম আলীর রায়ের পর এবার এ টি এম আজহারুল ইসলাম ও মাওলানা আবদুস সুবহানের শুনানির দিন পরবর্তী সময়ে নির্ধারণ করা হবে।
ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের এই দুই নেতার প্রত্যেককে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে তাঁরা আপিল করেছেন।
মামলার বিবরণে দেখা যায়, ট্রাইব্যুনালে যে মামলার রায় আগে ঘোষণা করা হয়েছে, সেটিতে আগে আপিল আবেদন করা হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় আপিল শুনানি চলছে। এ ছাড়া একটি শুনানি শেষ হলেই পরের মামলার আপিলের কার্যক্রম শুরু করছেন আপিল বিভাগ। এই ধারা বজায় থাকলে মীর কাসেম আলীর পরে এ টি এম আজহারুল ইসলাম এবং এরপর মাওলানা আবদুস সুবহানের আপিলের শুনানি হবে।
জামায়াতের এ দুই নেতা ছাড়াও আপিল বিভাগে যাঁদের আপিল চূড়ান্ত নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে তাঁরা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আওয়ামী লীগ নেতা মোবারক হোসেন, জাতীয় পার্টির নেতা সাবেক প্রতিমন্ত্রী হবিগঞ্জের সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার ও ইঞ্জিনিয়ার আবদুল জব্বার।
এদের মধ্যে আবদুল জব্বার ছাড়া অন্যদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আর জব্বার ছাড়া অন্যরা কারাবন্দি রয়েছেন। পিরোজপুরের সাবেক সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির নেতা আবদুল জব্বার পলাতক থাকলেও সরকারপক্ষ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছে। যাঁরা পলাতক রয়েছেন, তাঁরা আপিল করতে পারেননি।
জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাসেম আলীর চূড়ান্ত রায়ের মধ্য দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে সাতটি মামলায় চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এর মধ্যে জামায়াতের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতা রয়েছে ছয়জন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। একজনকে দেওয়া হয়েছে আমৃত্যু কারাদণ্ড। তিনজনের ফাঁসি এরই মধ্যে কার্যকর করা হয়েছে।
এ ছাড়া আপিল বিভাগের চূড়ান্ত দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। তাঁর মৃত্যুদণ্ড এরই মধ্যে কার্যকর হয়েছে।
আপিল বিভাগ থেকে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর চূড়ান্ত রায় দেওয়া হয়।
শুনানি চলাকালে মুক্তিযুদ্ধকালীন জামায়াতের আমির গোলাম আযম ও বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীমের মৃত্যু হওয়ায় তাঁদের আপিলের নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। ছয়টি মামলার মধ্যে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ছাড়া সবার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।