দেশব্যাপী শিশু হত্যার মূলে পরকীয়া : মন্ত্রিসভা কমিটি

‘দেশব্যাপী শিশু হত্যার মূলে রয়েছে মা-বাবার পরকীয়া। পরকীয়ার নির্মম বলি হচ্ছে নিষ্পাপ শিশুরা।’
উল্লিখিত অভিমত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কমিটির পর্যালোচনা বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে কমিটির সভাপতি শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু সাংবাদিকদের বলেন, ‘হঠাৎ করে দেশে শিশু নির্যাতন ও শিশু হত্যার ঘটনা লক্ষ করা যাচ্ছে। আমরা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ শেষে পর্যালোচনা করে দেখেছি যে, এসব ঘটনার মূলে রয়েছে শিশুদের মা-বাবার পরকীয়া।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
বৈঠকে এক সাংবাদিক মন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, বাঁশখালীর ঘটনায় হাজার হাজার গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গুরুতর আহত ব্যক্তিদেরও পুলিশ হাতকড়া পরিয়ে রেখে আসছে। হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এটা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন কি না?
জবাবে মন্ত্রী বলেন, বাঁশখালীর ঘটনা স্থানীয় প্রশাসন তদন্ত করছে। তদন্তের পরই প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন পরিস্থিত স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন করছে।
আরেক সাংবাদিক প্রশ্ন করে বলেন, পুলিশ সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার করছে। এমনকি হাসপাতালে গিয়েও আহতদের হাতকড়া পরিয়ে রাখছে। অথচ যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটির কারণে এতবড় ঘটনা ঘটেছে তাদের বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এটা সরকারের দ্বিমুখী আচরণ কি না?
জবাবে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে গ্রামবাসীর কেউ সমাবেশের পক্ষে ছিল। আবার এক পক্ষ সমাবেশ না করার পক্ষে ছিল। এটা গ্রামবাসীর দুই পক্ষের ঘটনা। এখানে বেশ কয়েকজন পুলিশও আহত হয়েছে। এরা ছররা গুলির আঘাতে আহত হয়েছে। এতে বুঝা যায় হামলাকারীরা বন্দুক ব্যবহার করেছিল এবং এ হামলা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। তবে ঘটনা যাই হোক তদন্তে তা বেরিয়ে আসবে বলে আমরা আশা করছি।’
সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে জানিয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য স্বল্পতার কারণে ইউপি নির্বাচনে কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। সামনের নির্বাচনগুলোতে এ ঘটনা আর ঘটবে না।’
‘তনু হত্যার ঘটনা ধামাচাপা পড়ছে কি না’- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ ঘটনার তদন্ত করছে। মামলাটি এখন সিআইডি তদন্ত করছে। তদন্তে যারা দায়ী বলে প্রমাণিত হবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’