নির্বাচন করার কারণ নাই, সুযোগ নাই, প্রয়োজনও নাই : খোকা

আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিলে বিএনপির বর্তমান আন্দোলন কর্মসূচিতে এর কোনো প্রভাব পড়বে কি না বা অংশ না নিলে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে কি না, তা নিয়ে দলের নীতিনির্ধারকরা বিচার-বিশ্লেষণ করছেন বলে জানিয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা। তবে জনগণ আর দেশের স্বার্থে নীতিনির্ধারকরা সঠিক সিদ্ধান্তই নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
গতকাল সোমবার নিউইয়র্ক সময় বিকেলে জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সাদেক হোসেন খোকা ।
খোকা বলেন, ‘আমি তো এই ঢাকা সিটি করপোরেশনের চারশ বছরের ইতিহাসে লংগেস্ট সার্ভিং মেয়র। আমার চেয়ে বেশি লাগাতার কেউ দায়িত্ব পালন করে নাই। এবং আমাকে ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় যখন নির্বাচন ডিউ হয়ে গেল, তার পরে এই সরকার ক্ষমতায় এসে অন্যান্য সিটি করপোরেশনের নির্বাচন করল। আমি ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলাম। এখন এই বিভক্ত সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে যাওয়াটা আমি ব্যক্তিগতভাবে সমীচীন মনে করি না, নাম্বার ওয়ান। নাম্বার টু, আমি শারীরিকভাবে যেহেতু এখানে চিকিৎসাধীন আছি, আমার হেলথ কন্ডিশনটাও এ রকম নাই যে আমি এখন নির্বাচনে যাব। আর বিএনপি বাংলাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। বিএনপি একেকটা করপোরেশনের যেকোনো জায়গায় ১০ জন যোগ্য প্রার্থী দিতে পারে। সুতরাং আমাকেই থাকতে হবে, এর কোনো মানে আমি দেখি না। সবকিছু বিবেচনায় আমার নির্বাচন করার কোনো কারণও নাই, সুযোগও নাই, প্রয়োজনও নাই।’
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই মেয়র নির্বাচনটা সরকার সামনে নিয়ে আসছে, এটাকে স্থানীয় সরকার বা ঢাকার যে নাগরিকদের কোনো সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা বা তাদের ভালো করে কীভাবে সার্ভ করা যায়, সেটা তাদের উদ্দেশ্য নয়।’
ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক এই মেয়র বলেন, ‘পার্টি যদি সেই বিবেচনা করে, আমি আমার অবস্থান ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করব। আমার পার্টির চেয়ারপারসনকে আমি বোঝানোর চেষ্টা করব যে, এই এই কারণে আমার যাওয়া ঠিক হবে না। তার পরও যদি পার্টি বলে যে না, বৃহত্তর রাজনৈতিক স্বার্থে যেতেই হবে, পার্টির নির্দেশই তো তখন আমার কাছে শিরোধার্য।’
ঢাকায় তাঁর নামে নির্বাচনী পোস্টারের বিষয়ে প্রশ্ন তুললে সাদেক হোসেন খোকা সেটাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মন্তব্য করেন।
বিএনপির ব্যানারে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা তাঁর লিখিত বক্তব্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের নিখোঁজ হওয়ার আগে ও পরের নানা তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে সরকারের সমালোচনা করেন। সে সঙ্গে সালাহ উদ্দিন আহমেদসহ অতীতে তুলে নিয়ে নিরুদ্দেশ করে দেওয়া সব নেতাকে তাঁদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে এবং ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়িয়ে জনগণের সহানুভূতি নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান খোকা।