বিশ্বজুড়ে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে, কমেছে বাংলাদেশে

সারা বিশ্বে সর্বশেষ গণনার তথ্য অনুযায়ী বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। গত এক শতাব্দীতে বাঘের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ঘটনা এই প্রথম। তবে বাংলাদেশে বাঘের সংখ্যা কমেছে। ভারতে অনুষ্ঠেয় বন্য প্রাণী সংরক্ষণবিষয়ক তিন দিনব্যাপী এক সেমিনারের প্রাক্কালে প্রাণী সংরক্ষণবিষয়ক বিভিন্ন সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে।
বন্য প্রাণী সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থা ডব্লিউডব্লিউএফ এবং বাঘ রক্ষাবিষয়ক সংস্থা গ্লোবাল টাইগার ফোরামের বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে বাঘের সংখ্যা বেড়ে তিন হাজার ৮৯০ হয়েছে। ২০১০ সালে বাঘের সংখ্যা সর্বনিম্ন তিন হাজার ২০০টিতে নেমে এসেছিল।
বিশ্বের মোট বাঘের ৭০ শতাংশেরই আবাস ভারত। ২০১৪ সালের এক গণনা অনুযায়ী দেশটির ১৮টি রাজ্যে দুই হাজার ২২৬টির মতো বাঘ আছে। রাশিয়া, ভুটান ও নেপালের গণনায়ও বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। তবে বাংলাদেশে বাঘের সংখ্যা কমেছে। ২০১০ সালের এক গণনায় বাংলাদেশে বাঘের সংখ্যা দাবি করা হয় ৪৪০। ২০১৫ সালে এই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১০৬। তবে অনেক সংরক্ষণবিদ দাবি করেন, ছয় বছর আগের দেশে গণনায় বাঘের সংখ্যা বেশি দেখানো হয়েছিল।
বাংলাদেশ ছাড়াও ইন্দোনেশিয়ায় বাঘের সংখ্যা বেশ কমেছে। বিশ্বব্যাপী পাম অয়েলের চাহিদা মেটাতে এবং কাগজ উৎপাদনের কারণে সেখানে বিপুল পরিমাণ বন ধ্বংস হয়েছে। ফলে বাঘের সংখ্যাও কমেছে।
এদিকে, কম্বোডিয়ায় ২০০৭ সালের পর থেকে কোনো বাঘ দেখা যায়নি। তাই দেশটিতে এই প্রাণী বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
২০২২ সালের মধ্যে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করতে সম্মত হয় ১৩ দেশ। ২০১০ সালে এমন অঙ্গীকার করা দেশগুলো হলো—বাংলাদেশ, ভুটান, চীন, কম্বোডিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, নেপাল, রাশিয়া, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম।
ডব্লিউডব্লিউএফের মহাপরিচালক মার্কো ল্যাম্বার্টিনি বলেন, টানা কয়েক দশক ধরে বাঘের সংখ্যা কমে যাওয়ার পর এই প্রথম এর সংখ্যা বাড়ল। আর ১৯০০ সালের পর এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল। ওই সময় বিশ্বে এক লাখের বেশি বাঘ ছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, বন ধ্বংস, আবাস হারানো ও হত্যার কারণে এশিয়াসহ সারা বিশ্বে বাঘের সংখ্যা কমে যায়। এ ছাড়া চামড়াসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের চাহিদা থাকায় এখনো বাঘ হত্যার ঘটনা ঘটে।
বিভিন্ন দেশ বাঘের সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছে। প্রাণী রক্ষাবিষয়ক বিভিন্ন সংস্থা জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে চলা প্রাণী রক্ষায় নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। তবে গণনার পদ্ধতির আধুনিকীকায়ন ও নতুন প্রযুক্তির কারণেও বাঘের সংখ্যা বেশি হয়েছে বলে মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞ।