মংলায় বিএনপি নেতা হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন

মংলায় বিএনপি নেতা আব্দুল হালিম তালুকদার হত্যা মামলায় মো. নূরুজ্জামান নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাটের দায়রা জজ আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান খান এই রায় দেন।
নিহত আব্দুল হালিম তালুকদার মংলা পৌর বিএনপির সহসাধারণ সম্পাদক, পৌর যুব দলের সভাপতি ছিলেন। তিনি পৌর কমিশনারের দায়িত্বও পালন করে ছিলেন। ২০০৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর তিনি নিহত হন।
রায়ে আসামি নূরুজ্জামানকে যাবজ্জীবন সাজাসহ ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং জরিমানা প্রদানে ব্যর্থ হলে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালতের বিচারক। মো. নূরুজ্জামান বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা ইউনিয়নের বর্ণি গ্রামের বাসিন্দা। তবে জামিনে মুক্তির পর থেকে তিনি পলাতক।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০০৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মংলা শহরের রিমঝিম সিনেমা হলের পেছনে বিএনপি নেতা আব্দুল হালিম তালুকদারসহ কয়েকজন ব্যাডমিন্টন খেলছিলেন। এ সময় দুটি রিকশায় করে চারজন খেলার মাঠে এসে যৌথ বাহিনীর পরিচয়ে হালিমকে ডাক দেয়। হালিম খেলা বন্ধ করে তাদের দিকে এগিয়ে গেলে আসামি নূরুজ্জামান তাঁকে (হালিম) গুলি করে হত্যা করে। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা নূরুজ্জামানকে ধাওয়া করে অস্ত্র ও গুলিসহ ধরে যৌথ বাহিনীর কাছে সোপর্দ করে।
ঘটনার পরের দিন ১৬ ডিসেম্বর নিহতের ভাই মোজাম্মেল হোসেন তালুকদার বাদী হয়ে নূরুজ্জামানসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো সাত-আটজনের বিরুদ্ধে মংলা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
পরে মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাগেরহাট জেলা সিআইডি পুলিশের তৎকালীন পরিদর্শক মো. রফিকুল ইসলাম জোয়ার্দার ২০০৮ সালের ১৮ মে তদন্ত শেষে ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২০১১ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয়ের আইন শাখা ১-এর (স্মারক নম্বর-স্বম (আইন ১) প্রত্যাহার ১২/১০ (২৩তম সভা)/৬২০৩) এক সভার সিদ্ধান্তে মামলার আসামিদের অব্যাহতি দিতে আদালতের কাছে আবেদন করে। মামলা চলাকালে আদালত ওই আবেদনটি আমলে নিয়ে ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তি দেওয়া আসামি নূরুজ্জামান বাদে অন্যদের অব্যাহতির বিষয়টি বিবেচনায় নেন এবং বিচারকাজ শুরু করেন। মামলার ১০ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামি নুরুজ্জামানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন বাগেরহাট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর শেখ মোহাম্মদ আলী এবং আসামিপক্ষে ছিলেন অজিয়ার রহমান পিকলু।