সারা দেশে নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট চলছে

বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, নৌপথে চুরি-ডাকাতি বন্ধ, নদী খননসহ ১৫ দফা দাবিতে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের নৌযান ধর্মঘট শুরু হয়েছে।
গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে এ ধর্মঘট পালন করা হচ্ছে। ফলে সারা দেশে সব ধরনের নৌ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম জানান, রাত থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন শুরু করেছেন তাঁরা। চট্টগ্রাম, বরিশাল, মংলাসহ সারা দেশের প্রায় ১২ হাজার নৌযানের (কার্গো, কোস্টার, বার্জ) শ্রমিক-কর্মচারীরা তাঁদের কাজ বন্ধ রেখে এ ধর্মঘট পালন করছেন। তিনি আরো জানান, মালিকপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের এসব দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে এলেও তা বাস্তবায়ন করছে না। সর্বশেষ গত এক মাসের মধ্যে সব দাবি বাস্তবায়নের কথা থাকলেও তা কার্যকর করেনি নৌযান মালিকপক্ষ।
এদিকে, গতকাল দিনভর দফায় দফায় বিষয়টি নিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে বৈঠক হলেও তাতে কোনো সুরাহা হয়নি। তাই এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। দ্রুত দাবি মেনে নেওয়া না হলে আরো কঠোর আন্দোলন-সংগ্রামের দিকে যাবে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন।
ধর্মঘটের ফলে চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দরে অবস্থানরত সব দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্যবোঝাই-খালাস কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া ধর্মঘটের ফলে সমুদ্রবন্দরগুলোর সঙ্গে সারা দেশের নৌ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ধর্মঘট চলাকালে সারা দেশের যাত্রীবাহী, পণ্যবাহী, পোস্টাল, ট্যাঙ্কার, বালুবাহী জাহাজ, ড্রেজার, শ্যালো ট্যাঙ্কারসহ সব ধরনের নৌযানের শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করবেন।
ফেডারেশনের দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—প্রত্যেক নৌশ্রমিককে নিয়োগপত্র ও সার্ভিস বুক প্রদান, নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সর্বনিম্ন মজুরি ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ, কর্মস্থলে আহত শ্রমিকের চিকিৎসা ব্যয় ও চিকিৎসাকালে বেতন পরিশোধ।