সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ড : দায়িত্বে অবহেলায় তিনজন বরখাস্ত

পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলী ক্যাম্প এলাকায় কয়েকবার নাশকতামূলক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার দায়ে তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম বিষয়টি জানিয়েছেন।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া তিনজন হলেন—নাংলী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেস্টার নাসির উদ্দিন হাওলাদার, বোটম্যান মোবারক হোসেন ও পলাশ মজুমদার।
এদিকে ধানসাগর স্টেশনের আওতাধীন নাংলী ক্যাম্পের পচাকোরালিয়া ও নাপিতখালী বিলে অবৈধভাবে মাছ চাষ করতে চাষিদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘুষ নিয়ে সংরক্ষিত বনাঞ্চল পোড়ানোর নেপথ্যে যিনি কাজ করেছেন, লোকালয়ে বহুল আলোচিত ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) সেই সুলতান মাহমুদ হাওলাদারকে ‘প্রাইজ পোস্টিং’ দেওয়া হয়েছে। তাঁকে চাকরির জন্য সুন্দরবনের সবচেয়ে লোভনীয় জায়গা চাঁদপাই রেঞ্জের সদর অফিসে বদলি করা হয়েছে। এ নিয়ে বন বিভাগের বিভিন্ন স্টেশন ও ক্যাম্পগুলোতে নানা সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
বহুল আলোচিত সুলতান মাহমুদকে চাঁদপাই রেঞ্জের সদর অফিসে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে বলে জানান চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন।
সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলী টহল ফাঁড়ি এলাকার পচাকোরালিয়া ও নাপিতখালী বিলের মধ্যবর্তী আবদুল্লার ছিলার গহীন অরণ্যে গত এক মাসে তিন বার নাশকতামূলক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ১২ এপ্রিল মধ্য রাতে ধরিয়ে দেওয়া আগুন তিনদিন ধরে জ্বলতে থাকে। এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার মাত্র চারদিনের ব্যবধানে একই এলাকার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ১৮ এপ্রিল ভোরে ফের আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। নাশকতার এই ঘটনায় বন বিভাগ আদালত ও থানায় পৃথক দুটি মামলা করে।
মামলা দুটিতে শরণখোলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহজাহান আলী হাওলাদার ওরফে শাহজাহান শিকারীকে প্রধান আসামি করে আওয়ামী লীগের ১১ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। তবে মামলার কোনো আসামিকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন এলাকায় বন কর্মকর্তারা প্রতি বছর সুন্দরবনের গহীন অরণ্যের বিভিন্ন বিলে অবৈধভাবে মাছ চাষ করতে চাষিদের সুযোগ করে দেয়। এর মাধ্যমে কয়েকটি অসাধু মাছ শিকারি চক্র বর্ষা মৌসুম আসার আগে বিলগুলো পরিষ্কার ও সহজে কারেন্ট জালপাতার স্থান প্রস্তুত করতে পরিকল্পিতভাবে সুন্দরবনে আগুন ধরিয়ে দেয়।