এক মাসের মধ্যে মোবাইল সেটের তথ্যভাণ্ডার

মোবাইল হ্যান্ডসেটের আইএমইআই নম্বর নিবন্ধন করার ভাবনা থাকলেও আপাতত সেই প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে না। তবে এক মাসের মধ্যে হ্যান্ডসেটের আইএমইআইর তথ্যভাণ্ডার (ডেটাবেইস) তৈরি করা হবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এ কথা জানিয়েছেন।
আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ’-এর সেমিনারে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘একসময় আমরা মোবাইল হ্যান্ডসেট আইএমইআই নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় যাব। তবে আপাতত নয়। আপাতত আমরা বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের কাজটি শেষ করতে চাই।’
তারানা হালিম বলেন, ‘আমরা মাসখানেকের মধ্যে বিটিআরসির মাধ্যমে একটি সার্ভারে সফটওয়্যারের মাধ্যমে আইএমইআই ডেটাবেইস মেইনটেইন করার জন্য ইনস্টল করব। বিটিআরসির ওয়েবসাইটে গেলে গ্রাহকরা তাদের আইএমইআই নম্বরটি দেখতে পাবেন। যা এসএমএস এর মাধ্যমেও যাচাই করতে পারবেন।’
সিম নিবন্ধনের উদ্যেগের সঙ্গে সঙ্গে আইএমইআই রেজিস্ট্রেশন সম্ভব নয় জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটি করলে মানুষ অনেক বেশি নিয়ন্ত্রিত বোধ করবে। সাধারণ মানুষের সেন্টিমেন্টকে গুরুত্ব দিতে হয়। সাধারণ গ্রাহক আসল বলেই হ্যান্ডসেট কিনেছে, নকল হওয়ার কারণে কেন তা বন্ধ হবে এবং নিরপরাধ ব্যক্তি কেন শাস্তি পাবে। এ জন্য প্রাথমিকভাবে ডেটাবেইস করতে চাচ্ছি।’
মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেটের বিদ্যমান কর কাঠামো পুনর্বিবেচনা করার জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ থেকে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তারানা হালিম বলেন, ‘সবার হাতে স্মার্ট মোবাইল হ্যান্ডসেটে পৌঁছে দিতে এ খাতের বিদ্যমান কর কাঠামো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।’
বাংলাদেশ গঠনে মোবাইল হ্যান্ডসেটের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যত মানুষের হাতে স্মার্টফোন পৌঁছাবে, তত মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করবে এবং অন্যান্য ডিজিটাল সার্ভিস ব্যবহার করার ফলে সরকারের রাজস্ব বাড়বে। হ্যান্ডসেট আমদানি থেকে যে এক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়, তার চেয়ে বেশি আয় হতে পারে।’
টেলিযোগযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাজাহান মাহমুদ বলেন, শুধু মোবাইল হ্যান্ডসেট নয়, সুযোগ পেলে সব কিছু দেশে উৎপাদিত হবে না কেন? এই মোবাইল ফোন আনতে হলে ২০ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হয়। আর তৈরি করার জন্য যন্ত্রপাতি নিয়ে আসলে খরচ হয় ৩৭ শতাংশের বেশি। যাঁরা মোবাইল ফোন আমদানি করেন, তাঁরা দ্রুত এ বিষেয় আবেদন করেন, যেখানে যা প্রয়োজন আমরা করব।’
বাংলাদেশে মোবাইল ফোন আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমপিআইএ) সভাপতি রুহুল আলম আল মাহবুব মানিক বলেন, ‘একটি ব্যবসাবান্ধব নীতিমালা দরকার। দুই বছর আগে ১০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ হ্যান্ডসেটে কর আরোপ করা হয় ফ্যাক্টরি হবে এই বলে, তবে তা হয়নি। হ্যান্ডসেট তৈরির জন্য কর কাঠামো কমালে আমরা এগিয়ে আসতে পারব। ৫ শতাংশ কর করা হলে আগামী তিন বছরে আমদানিনির্ভর দেশ থেকে বের হয়ে আসব। গ্লোবাল ব্র্যান্ডগুলো এখানে আসতে শুরু করবে। ট্যাক্স ফ্রেন্ডলি হলে দেশে সব ধরনের ব্র্যান্ড তৈরি হবে।’
টিআরএনবি সভাপতি রাশেদ মেহেদির সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিআরএনবির সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ।
কাস্টম গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর মহাপরিচালক ড. মইনুল খান, ঢাকা কাস্টম হাউসের কমিশনার লুৎফর রহমান, বিটিআরসির মহাপরিচালক কর্নেল নাসিম পারভেজ, অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) প্রতিনিধি এবং গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মাহমুদ হোসেন এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ আবু সাঈদ খান সেমিনারে বক্তব্য রাখেন।