অনিয়ন্ত্রিত টাওয়ার পরিবেশের ক্ষতি করে : তারানা হালিম

ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছেন, অনিয়ন্ত্রিত টাওয়ার পরিবেশের ক্ষতি করে। তিনি আরো বলেন, নেটওয়ার্ক উন্নয়নে মোবাইল ফোনের টাওয়ারের সুষ্ঠু সমন্বয় করতে হবে।
আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশে টাওয়ার ব্যবসায় সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে তারানা হালিম এ কথা বলেন। টেলিযোগাযোগ খাতের প্রতিবেদকদের সংগঠন ‘টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ’ (টিআরএনবি) এ সেমিনারের আয়োজন করে। টিআরএনবির পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
সেমিনারে গ্রাহক স্বার্থ বিবেচনা করে মোবাইল ফোন খাতের টাওয়ার ব্যবসা লাইসেন্স নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
তারানা হালিম বলেন, ‘যে গাইডলাইনটি তৈরি করা হচ্ছে, তাতে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করা উচিত, সেই সঙ্গে সঙ্গে আরো কয়েকটি বিষয় নিশ্চিত করতে চাই, এটি যেন প্রতিযোগিতামূলক হয়, মনোপলি সৃষ্টি না করে, সবার জন্য যেন লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি হয়।’
টাওয়ার শেয়ার সংক্রান্ত ব্যবসায় বিভিন্ন দেশে নানা রকমের মডেল আছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে একটি মডেল গ্রহণ করতে হবে।’
টেলিযোগযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) প্রধান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, বিটিআরসি বিনিয়োগ উৎসাহিত করছে এবং বিনিয়োগ সুরক্ষাও নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।
শাহজাহান মাহমুদ বলেন, ‘কেউ যেন বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে সে বিষয়ে বিবেচনা করেই এই খাতে লাইসেন্স দেওয়া হবে। বাজারের দাবি অনুযায়ী লাইসেন্স দেওয়া হবে। সেখানে ২৪ হাজার টাওয়ার হওয়ার কথা ছিল, সেখানে দেশে ৩৬ হাজার টাওয়ার হয়েছে, সামনে ফোরজি প্রযুক্তি চালু হলে আরো টাওয়ার হবে। তবে এই টাওয়ারগুলো মধ্যে কোনো শেয়ারিং নেই।’
শাহজাহান মাহমুদ বলেন, ‘নতুন টাওয়ার কোম্পানি আমাদের প্রয়োজন। টাওয়ার ব্যবসা ও টেলিযোগাযোগ সেবা আলাদা হওয়া উচিত। তবে এই কোম্পানিগুলোকে স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠান হতে হবে।’
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শওকত মোস্তফা বলেন, ‘অপারেটর ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করেই টাওয়ার শেয়ারিং লাইসেন্স নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে।’
গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অ্যাফায়ার্স অফিসার মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘যোগ্য প্রতিষ্ঠানকে টাওয়ার লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়টি নীতিমালায় থাকা উচিত। এখানে মার্কেট ওপেন থাকা উচিত যাতে আগামীতে টাওয়ার স্থাপনে কোনো বাধা না থাকে। কারণ যেখানে টাওয়ার কোম্পানি বা অন্যরাও নেটওয়ার্ক স্থাপনে যাবে না সেখানে অপারেটরদের টাওয়ার স্থাপন করার বিষয়টিও বিবেচনায় থাকতে হবে।’
অপারেটর রবির নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহেদ আলম বলেন, ‘মার্কেট বিবেচনা করে টাওয়ার কোম্পানির বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত। এখানে সংখ্যা নির্ধারণ করে দেওয়া ঠিক হবে না এবং লাইসেন্স দিলে যোগ্য ও অভিজ্ঞদের লাইসেন্স নিশ্চিত করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব টি আই এম নুরুল কবির, বাংলালিংকের সিনিয়র ডিরেক্টর অব জিআর অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স তৈমুর রহমান, ফাইবার অ্যাট হোমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈনুল হক সিদ্দিকী, টেলিকম গবেষক ও এনালাইসিস ম্যাসনের পার্টনার আমরিশ কাক্যার বিশ্বের টাওয়ার বাজারের একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
টিআরএনবি সভাপতি রাশেদ মেহেদির সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিআরএনবির সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ।