রোগের কথা গোপন করলে জেল-জরিমানা!
যক্ষা, হেপাটাইটিস, অ্যানথ্রাক্স, ম্যালেরিয়া, বার্ড-ফ্লু, নিপাহ ভাইরাস ও ইবোলাসহ বিভিন্ন সংক্রামক রোগে আক্রান্ত রোগীকে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। রোগের তথ্য গোপন করে জনসম্মুখে চলাফেরা করা যাবে না। তথ্য গোপন করে জনসম্মুখে ঘুরে বেড়ালে ওই ব্যক্তি অপরাধী হিসেবে গণ্য হবেন।
এমন বিধান যুক্ত করে নতুন একটি আইন করছে সরকার। এরই মধ্যে ‘সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল আইন, ২০১৬’ নামে ওই আইনের খসড়া অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পেশ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রিপরিষদ সূত্রে জানা যায়, আগামীকাল সোমবারের মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে আইনের খসড়াটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।
প্রস্তাবিত আইনে সংক্রামক রোগের তথ্য গোপনকারীর বিরুদ্ধে দুই লাখ টাকা জরিমানা বা দুই বছরের কারাদণ্ডের বিধানের কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে আইন অমান্যকারী বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অণুর্ধ দুই বছর কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার কথা বলা হয়েছে।
প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর, ফাইলেরিয়াসিস, ডেলু, সব ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিপাহ, অ্যানথ্রাক্স, মার্স, জলাতঙ্ক, জাপানিজ এনকেফালাইটিস, ডাইরিমাল ডিজিজেস, এইচআইভি, যক্ষা, টাইফয়েডসহ বিভিন্ন জীবাণু, বায়ু ও পানিবাহিত সংক্রামক রোগের কারণে অনেক সময় জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে পড়ে। এ রোগ যাতে ছড়িয়ে না পড়তে পারে সেজন্য সংক্রামক রোগে আক্রান্ত বা সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে দ্রুত শারীরিক পরীক্ষা করাতে হবে। রোগ প্রতিরোধে যত দ্রুত সম্ভব প্রতিষেধক টিকা দিতে হবে। সংক্রামক এলাকাকে মুক্ত এলাকা হতে আলাদা রাখতে হবে।
খসড়ায় আরো বলা হয়, সংক্রামক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট হাসপাতাল, অস্থায়ী হাসপাতাল, স্থাপনা বা গৃহে অন্তরীণ বা আলাদা রাখা যাবে। সংক্রামক রোগ বিস্তাররোধে কর্তৃপক্ষ যেকোনো প্রতিষ্ঠান, বাজার, গণজমায়েত, স্টেশন ও বন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করতে পারবে। পাশাপাশি উড়োজাহাজ, জাহাজ, জলযান, বাস, ট্রেন ও অন্যান্য যানবাহন দেশে আগমন, নির্গমন অথবা দেশের অভ্যন্তরে একস্থান হতে অন্যস্থানে চলাচল নিযিদ্ধ ঘোষণা করতে পারবে। এ ধরনের রোগীকে সরকার স্বীকৃত চিকিৎসক ছাড়া অন্য কেহ চিকিৎসা সেবা ও গবেষণাগারে পরীক্ষা করাতে পারবে না। রোগের বাহক দমনের উদ্দেশে বসত ঘর ও অন্যান্য গৃহে কীটনাশক ছিটানোর ব্যবস্থা করা।