দরজা আটকে নির্বাচন কর্মকর্তাকে পিটুনি!
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে পিটিয়েছেন চট্টগ্রাম-১৬ আসনে আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। আজ বুধবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কক্ষে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পছন্দমতো নির্বাচনী কর্মকর্তা নিয়োগ না দেওয়ায় এই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেছেন লাঞ্ছিত জাহিদুল ইসলাম।
চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল বাতেন বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলামকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনা আমরা নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে জানানোর পর কমিশন উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে নির্বাচন স্থগিত করে দিয়েছে।’
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, ইউনিয়ন পরিষদের শেষ দফা নির্বাচনে বাঁশখালী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সংসদ সদস্যের পছন্দ মতো নির্বাচনী কর্মকর্তা নিয়োগে একটি তালিকা পাঠান। কিন্তু তালিকা অনুযায়ী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং এজেন্ট না দেওয়ায় তাঁকে ডেকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন সংসদ সদস্য। এ সময় সংসদ সদস্যের সঙ্গে থাকা ওলামা লীগের নেতা আকতারসহ দলীয় লোকজনও তাঁকে লাঞ্ছিত করেন বলে জানান।
মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জামায়াত-শিবিরের লোকজনকে নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নির্বাচন কর্মকর্তা আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এতে আমি উত্তেজিত হয়ে গালাগাল করি। কিন্তু কোনো মারধর করিনি।’
‘৪ জুনের পর তোর লাশ যাবে’
নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বেলা আনুমানিক সাড়ে ১১টা নাগাদ। আমি একটু বাইরে ছিলাম। আমার অফিস থেকে অফিস সহকারী ফোন দিয়ে বলেন যে স্যার, এমপি মহোদয় আপনাকে খুঁজছেন। তো আমি মিনিট পাঁচেকের মধ্যে অফিসে এসে জানতে পারি, এমপি মহোদয় ইউএনও অফিসে বসা। তখন অফিসে গিয়ে দেখি, এমপি মহোদয় একই চেয়ারে বসে আছেন। তারপর আমি গিয়ে সালাম দিয়ে দাঁড়ালাম। উনি বললেন যে বস। আমি বসলাম। তিনি তাঁর লোকদের ইশারা দিলেন বাইরে থেকে দরজা আটকে দিতে এবং জানালার পর্দা টেনে দিতে। বাইরে থেকে জানালা, দরজা সব আটকে দেওয়া হলো। এরপর উনি প্রথমেই আমাকে বলছেন, ওই ... পো, তুই কথা শুনস না কিল্লিগা? আমি বললাম, স্যার আপনি অত্যন্ত সম্মানিত মানুষ। আপনি আমাকে গালি দেবেন না, স্যার। প্লিজ। উনি উঠে দাঁড়িয়ে আমাকে থাপর দিয়ে বলছেন, তোকে গালি দেব না। তোকে বাঁশখালী থেকে, তোর লাশ যাবে। ৪ তারিখের পরে তোর লাশ যাবে। আমি বললাম, স্যার আপনি আমাকে গালি দেবেন না। তারপর যখন উনি আমাকে মারছেন, আমি ভয়ে চিৎকার করেছি। বাইরে থেকে আরো কয়েকজন সন্ত্রাসী এসে আমাকে মারধর করে। আমি তখন আমার জেলা স্যারকে ফোন করার জন্য পকেট থেকে মোবাইলটা বের করি। তখন পুলিশের এক সাব-ইন্সপেক্টর চাম্পু আমার হাত থেকে মোবাইল নিয়ে নেয়। তার কাছে আমার মোবাইলটা দাবি করি। কিন্তু সে মোবাইলটা আমাকে দেয় না।’