গোসাইরহাটে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ, স্বামী পলাতক

শরীয়তপুরের গোসাইরহাটের কোদালপুরের ছৈয়ালপাড়ায় বসতঘরের ভেতর থেকে রানী বেগম (২৮) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে গোসাইরহাট থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, যৌতুকের জন্য স্বামী রানীকে হত্যা করে লাশ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ঘটনার পর নিহতের স্বামী গনি গাজী পলাতক।
নিহতের বাবা আহসান উল্লাহ সরকার ও গোসাইরহাট থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১০ বছর আগে জেলার ডামুড্যা উপজেলার পূর্ব ডামুড্যা গ্রামের আহসান উল্লাহ সরকারের মেয়ে রানীর (২৮) সঙ্গে গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর ইউনিয়নের ছৈয়ালপাড়া গ্রামের বিল্লাল গাজীর ছেলে আবদুল গনি গাজীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে জেলে স্বামী গনি গাজী যৌতুকের জন্য স্ত্রী রানী বেগমকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে আসছেন। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে মাঝেমধ্যেই জামাতাকে টাকা-পয়সা দিত রানীর পরিবার। ১০ বছরের দাম্পত্য জীবনে তাঁদের ঘরে আফ্রিদি (৭) নামের এক ছেলেসন্তান রয়েছে। এরই মধ্যে নিহত রানীর স্বামী গনি গাজী মাছ ধরার জাল কেনার কথা বলে স্ত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনার চাপ দেন। এ নিয়ে গত শুক্রবার বিকেলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় রানীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ তাঁর স্বজনদের। রানী বেগম প্রতিদিনের মতো ইফতারের পর ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন। রাত ৯টার দিকে শাশুড়ি সুফিয়া বেগম ঘরের ভেতরে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে দরজা খুলতে ডাকাডাকি করেন। কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে গিয়ে রানীকে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। স্থানীয় লোকজন গোসাইরহাট থানার পুলিশকে খবর দেয়।
পুলিশ আজ শনিবার সকালে মরদেহ উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে রানীর লাশ তাঁর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে স্বামী গনি গাজী পলাতক।
নিহত রানীর বড় ভাই লাল মিয়া সরকার বলেন, তাঁর বোন রানী বেগমকে তাঁর স্বামী ও পরিবারের লোকজন হত্যা করেছে। আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার জন্য লাশ ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে গেছে।
নিহত রানীর বাবা আহসান উল্লাহ সরকার বলেন, ‘আমার মেয়েকে যৌতুকের জন্য বিভিন্ন সময় মারধর করত। আমার মেয়েকে হত্যা করে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছে। আমি এর বিচার চাই।’
গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।