দরিদ্র মা, দুস্থ নারীদের অর্থ সহায়তা দেবে সরকার

দেশের পাঁচ লাখ দরিদ্র গর্ভবতী নারীকে নগদ অর্থ সহায়তা দেবে সরকার। একইসঙ্গে শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী সন্তানের মা, যারা আর্থিকভাবে অসচ্ছল তাদেরও অর্থ সহায়তা দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার একনেক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
একনেক পরবর্তী সাংবাদিক সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বলেন, দরিদ্র নারীদের গর্ভধারণের পর থেকে চারবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হবে। প্রতিবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ২০০ টাকা করে দেওয়া হবে।
এ ছাড়া শূন্য থেকে ২৪ মাস বয়সী দরিদ্র শিশুদের প্রতিমাসে একবার শরীর বৃদ্ধির পরীক্ষা করে নগদ ৫০০ এবং ২৫ থেকে ৬০ মাস বয়সী শিশুদের তিন মাসে একবার শরীর বৃদ্ধির পরীক্ষা করে নগদ এক হাজার টাকা দেওয়া হবে। গর্ভবতী ও মায়েরা প্রতি মাসে শিশু পুষ্টি ও উন্নত শিক্ষা সংক্রান্ত কর্মশালায় অংশ নিলে প্রতিবার ৫০০ টাকা করে পাবেন বলে জানানপরিকল্পনামন্ত্রী ।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে শিশু ও নারী মৃত্যুর হার হ্রাসের পাশাপাশি শিশু ও নারী পুষ্টিও নিশ্চিত হবে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে দুই হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার ৩৮ কোটি টাকা ও বিশ্ব ব্যাংক অবশিষ্ট দুই হাজার ৩৪০ কোটি টাকা প্রকল্প সাহায্য হিসেবে ঋণ দেবে। স্থানীয় সরকার বিভাগ ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করবে।
গর্ভবতী নারীদের সহায়তা প্রকল্পে দেশের রংপুর ও ঢাকা বিভাগের সাত জেলার ৪২টি উপজেলার ৪৪৩টি ইউনিয়নের ১৬ লাখ পরিবার থেকে পাঁচ লাখ দুস্থ নারী বাছাই করা হবে। পরে পর্যায়ক্রমে দেশের ৬৪টি জেলা এ প্রকল্পের আওতায় আসবে। একনেক গর্ভবতীদের নগদ অর্থ সহায়তায় ‘ইনকাম সাপোর্ট প্রোগ্রাম ফর দ্য পুওরেস্ট (আইএসপিপি)’ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।
বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, এ দিন একনেক সভায় মোট চার হাজার ৪৯০ কোটি টাকার আটটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মোট ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে সরকারি অর্থায়ন এক হাজার ৬৩৬ কোটি, প্রকল্প সাহায্য দুই হাজার ৮৪৭ কোটি এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন সাত কোটি টাকা। অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে ছয়টি নতুন ও দুটি পুরাতন।
সভায় সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ ও গাজীপুরের আটটি উপজেলায় গ্যাস সঞ্চালন লাইন স্থাপনে ৯৭৯ কোটি টাকায় ধনুয়া-এলেঙ্গা এবং বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম তীর-নলকা গ্যাস ট্রান্সমিশন পাইপ লাইন প্রজেক্টের অনুমোদন দেওয়া হয়।
এর মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৪৬৫ কোটি, জাপানি উন্নয়ন সংস্থা-জাইকা প্রকল্প সাহায্য হিসেবে ৫০৭ কোটি ও অবশিষ্ট সাত কোটি টাকা সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে।
এ প্রকল্পের আওতায় ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের ৬৬ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপ লাইন নির্মিত হবে। এর ফলে বিদ্যমান ও নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্র, সার কারখানা ও অন্যান্য শিল্প কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত হবে বলে একনেক সভায় জানানো হয়। গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল) ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।