শরীয়তপুরে স্কুলশিক্ষককে কুপিয়ে জখম

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। আহত অলিউল্লাহ দেওয়ান (৩২) উপজেলার দুলারচর ছয়ানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
আজ শুক্রবার ভোররাতে উপজেলার কাঁচিকাটা ইউনিয়নের চর জিংকিং গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষককে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা নাহিদুজ্জামান রিমন বলেন, ‘ওই শিক্ষকের মাথার দুদিকে দুটি বড় আঘাত রয়েছে। আঘাতের গভীরতা দেখে মনে হচ্ছে, ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে তাঁকে। আমরা তাঁকে পর্যবেক্ষণে রেখেছি।’
ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল হক আকন্দ বলেন, শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনার খবর পেয়েছি। এখনো কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। পুলিশ অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা চালাচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পদ্মা নদীর তীরে দুর্গম চর জিংকিং গ্রামে ৪০ নম্বর দুলারচর ছয়ানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক অলিউল্লাহ দেওয়ান থাকেন বিদ্যালয়ের পাশে আলী হোসেন প্রধানিয়ার বাড়িতে। শিক্ষকের বাড়ি একই উপজেলার উত্তর তারবনিয়া গ্রামে। বিদ্যালয়ে অন্য কোনো শিক্ষক কর্মরত না থাকায় তাঁকে পাঠদানের পাশাপাশি দাপ্তরিক কাজ করতে হয়। এ কারণে বিদ্যালয়ে ঈদের ছুটি থাকলেও তিনি দাপ্তরিক কাজের জন্য সেখানে অবস্থান করছিলেন।
শুক্রবার ভোর রাতে ঘরের দরজা ভেঙে দুর্বৃত্তরা ওই শিক্ষককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। তাঁর মাথায় দুটি স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে। এ ছাড়া তাঁকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে।
হাসপাতালে শিক্ষক অলিউল্লাহ দেওয়ান বলেন, ভোর রাতের দিকে চর জিংকিং গ্রামের জেদ্দাল মোল্লা ও তাঁর ছেলে রাজু পাঁচ-ছয়জন লোক নিয়ে দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে আমার ওপর আক্রমণ করে। তারা আমাকে ঘরের মেঝেতে ফেলে মাথায় কোপায় ও রড দিয়ে পিটিয়ে ফেলে রেখে যায়। গত বছর স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান নিয়ে তাদের সঙ্গে আমার বিরোধ হয়েছিল।’
৪০ নম্বর দুলারচর ছয়ানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী ও নৈশপ্রহরী শাহজাহান খান বলেন, ‘খবর পেয়ে স্যারকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। তাঁর পরিবারের সদস্য ও পুলিশকে ঘটনা জানাই। স্যারের মুখে শুনেছি, জেদ্দাল মোল্লা ও তাঁর ছেলে রাজু এ হামলা চালিয়েছে।’
জেদ্দাল মোল্লা কাঁচিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য। মুঠোফোনে চেষ্টা করেও জেদ্দাল মোল্লা ও তাঁর ছেলে রাজু মোল্লাকে পাওয়া যায়নি।