লাকড়ির মধ্যে কাপড়ে পেঁচানো ছিল শিশুটির লাশ

শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলায় ছয় মাসের একটি শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ এক নারীকে আটক করেছে।
আজ শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার নলমুরি ইউনিয়নের ঘাটাখান গ্রাম থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিশু মীম ওই গ্রামের ভ্যানচালক বিল্লাল খান ও শিল্পী বেগমের মেয়ে। পরিবারের অভিযোগ, পূর্বশত্রুতার জের ধরে মিমকে হত্যা করা হয়েছে।
আটক পিয়ারা বেগম শিশুটির প্রতিবেশী আলাউদ্দিন মাঝির স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানায়, সকালে শিল্পী মেয়ে মীমকে ঘরে ঘুম পাড়িয়ে রেখে বাইরে কাজ করতে থাকেন। দুপুর ১২টার দিকে ঘরে গিয়ে বিছানায় মেয়েকে দেখতে না পেয়ে খুঁজতে থাকেন। ১টার দিকে বসতঘরের পেছনে একটি পরিত্যক্ত লাকড়ির ঘরের মধ্যে কাপড় পেঁচানো অবস্থায় মীমের দেহ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে গোসাইরহাট থানায় নিয়ে আসে।
মিমের দাদি সাহিদা বেগম বলেন, ‘মিমের মা শিল্পী বেগমের সঙ্গে চার দিন আগে ঝগড়া হয় পিয়ারা বেগমের। সামান্য একটু ঝগড়ার কারণে পাষণ্ডরা আমার নাতনিকে মেরে ফেলবে তা ভাবতেও পারিনি। দুধের শিশুর সঙ্গে এমন শত্রুতা কোনো মানুষ করতে পারে? আমার ছেলেটার একমাত্র মেয়ে ছিল মিম। এমন পাষণ্ড খুনিদের ফাঁসি হওয়া উচিত।’
মিমের মরদেহ পাওয়ার পর বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তার মা শিল্পী বেগম। মেয়ের লাশের পাশে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন তিনি। খবর পেয়ে কাজ ফেলে বাড়িতে ছুটে আসেন বাবা বিল্লাল হোসেন। প্রিয় সন্তানকে হারিয়ে তিনিও বিলাপ করছিলেন।
বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ, কঠোর পরিশ্রম করে পরিবার নিয়ে সুখে ছিলাম। মানুষের সঙ্গে আমাদের তেমন কোনো বিরোধ নেই। সামান্য একটি বিষয় নিয়ে আমার স্ত্রীর সঙ্গে প্রতিবেশী পিয়ারা বেগমের ঝগড়া হয়। এ কারণে তারা আমার সন্তানকে হত্যা করে লাশ ঘরের মধ্যে ফেলে রেখেছে।’
গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ‘দুধের শিশুকে হত্যার ঘটনাটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। শিশুহত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে জনতা পিয়ারা বেগম নামে এক নারীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। পুরো ঘটনাটি আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত না করে বলা যাচ্ছে না, কী কারণে শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে।’