বিএনপিতে পদ পাওয়ায় বাবা-ছেলেকে সংবর্ধনা

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাওয়ায় মীর মোহাম্মদ নাছিরউদ্দিন ও তাঁর ছেলে ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীনকে চট্টগ্রামে সংবর্ধনা দিয়েছেন নেতাকর্মীরা।
আজ শনিবার বেলা আড়াইটায় ঢাকা থেকে ট্রেনে করে চট্টগ্রামে ফিরলে পুরাতন রেলস্টেশন চত্বরে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার নেতাকর্মীরা তাঁদের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে ও পাপড়ি ছিটিয়ে সংবর্ধনা দেন।
এ সময় নেতাকর্মীদের উপস্থিতি রেলস্টেশন চত্বর ছাপিয়ে প্রধান সড়কে ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর, দক্ষিণ ও হাটহাজারী, বায়েজিদ এলাকার কয়েক হাজার নেতাকর্মী খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে রেলস্টেশন চত্বরে এসে সমবেত হয়।
সাবেক মন্ত্রী, মেয়র ও রাষ্ট্রদূত মীর মোহাম্মদ নাছিরউদ্দীন আগের কমিটিতে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন। সদ্য ঘোষিত কমিটিতে তাঁকে ভাইস চেয়ারম্যানের পদ ও তাঁর ছেলে হেলালকে নির্বাহী সদস্য পদ দেওয়া হয়েছে।
সংবর্ধনার জবাবে বিএনপির সদ্য ঘোষিত কমিটি নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্য কুরুচিপূর্ণ ও রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত বলে মন্তব্য করেন মীর মোহাম্মদ নাছিরউদ্দিন। তিনি বলেন, বিএনপির কমিটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের গাত্রদাহ প্রমাণ করে খালেদা জিয়া সঠিক নেতৃত্ব নির্বাচন করেছেন। বিএনপি সঠিক পথেই আছে। ১৯৮২ সাল থেকে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার অনেক অপচেষ্টা হয়েছে। কোনো চক্রান্ত সফল হয়নি। ভবিষ্যতে বিএনপির নেতাকর্মীরাই জীবন দিয়ে বেগম জিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে।
বিএনপির অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আওয়ামী লীগের যত ভয় জনগণকেই। তারা জনগণের মতামত, বাকস্বাধীনতা ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না বলেই একেক সময় একেক কিছুর ধুয়া তোলে। যেমন এখন জঙ্গিবাদের ধুয়া তুলে সারা দেশের মানুষকে আতঙ্কিত করে রেখেছে। আর বিদেশি প্রভুদের দয়া খুঁজছে। অন্যদিকে তারা যখনই ক্ষমতায় আসে, জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পদদলিত করে গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতাহীন একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে।
মীর নাছির বলেন, আওয়ামী লীগ জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বক্তৃতা-বিবৃতিতে কথা বললেও তাদের সন্তানরাই এ কাজে জড়িত, প্রমাণ হয়েছে। আর আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরী তো বলেই দিয়েছেন যারা কালো কোট (মুজিব কোট) পরে জঙ্গিবাদের অর্থায়ন করছে যা এক সপ্তাহে তাদের তালিকা প্রকাশ করবে। আর বন্দরের মাফিয়ারাই জঙ্গির অর্থায়ন করছে। এতেই প্রমাণিত হয় আওয়ামী লীগ জঙ্গিবাদকে ক্ষমতায় টিকিয়ে থাকার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। আর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জামায়াত নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ব্যবসা করলেও বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের রাজনৈতিক ঐক্য করেছে মাত্র। আওয়ামী লীগের সাহস থাকলে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করুক।
সংবর্ধনার জবাবে নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল বলেন, ‘আমাদের পরিবার অনেক জেল, জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছে শুধু জাতীয়তাবাদী শক্তির নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে। আমি ও আমার বাবা বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের এক মুহূর্তের জন্যও পেছনে ফেলে যাইনি। ইনশাআল্লাহ্ যতদিন বেঁচে থাকি, এই দলের নেতাকর্মীদের সুখে-দুঃখে সঙ্গে থাকব।’
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির নতুন সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, মহানগর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক সহসভাপতি শামসুল আলম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট ইফতেখার হোসেন চৌধুরী মহসিন, আবদুল গাফফার চৌধুরী, উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও হাটহাজারী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ নূর মোহাম্মদ, মহানগর বিএনপি নেতা নিয়াজ মোহাম্মদ খান, কোতোয়ালি থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুন জামান, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন দীপ্তি, উত্তর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সোলাইমান মঞ্জু, কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মহানগর বিএনপি নেতা এম এ হান্নান, সুবক্তগীন সিদ্দিকী মক্কী, সৈয়দ আহমদ, জহির আহমদ, ফয়েজ আহমদ, বাকলিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, আকতার খান, শওকত আজম খাজা, চট্টগ্রাম জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এনামুল হক, মহানগর বিএনপির সাবেক আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট তারিক আহমেদ, অ্যাডভোকেট আহমেদ কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ, কমিশনার মোহাম্মদ আজম, মো. তৈয়ব, মাহবুব রানা, বাঁশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র কামরুল ইসলাম হোসাইনী, চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান, সাবেক ছাত্রনেতা কামরুল ইসলাম, উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সরওয়ার উদ্দিন সেলিম, মহানগর সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, যুগ্ম সম্পাদক মোশারফ উদ্দিন, আলী মর্তুজা খান, বিএনপি নেতা মুজিবুল হক, সাহাব উদ্দিন, জাফর আহমদ, আলাউদ্দিন আলী নূর, শাহ আলম, মোহাম্মদ সোলাইমান, সাতকানিয়ার বিএনপি নেতা নবাব মিয়া, সন্দ্বীপ পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আহসানুল কবির রিপন, হাটহাজারী পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আবদুস শুক্কুর মেম্বার, আইয়ুব খান, মোছলেম উদ্দিন, জসিম উদ্দিন মিন্টু, রৌশনগীর আমীন, রাশেদুল হাসান মিল্টন, এম এ রাজ্জাক, আসিফ চৌধুরী, অরূপ বড়ুয়া, কাউসার হোসেন বাবু, শাখাওয়াত হোসেন শিমুল, অ্যাডভোকেট এরশাদুর রহমান রিটু, আবদুল্লাহ, জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক মামুনুর রশিদ শিপন, এস এম আব্বাস, আসলাম উদ্দিন, এম এ সাকি, আবু মুছা, ফজল করিম, মোহাম্মদ সেলিম, জাহাঙ্গীর আলম, মো. মহিউদ্দিন, আকতার হোসেন লেদু, আবু তাহের, মো. মোতালেব, কাজী সাইফুল ইসলাম টুটুল, শ্রমিক নেতা আবু বক্কর ছিদ্দিক, হাসান ওসমান, মহানগর যুবদল নেতা মো. হারুন, আনোয়ারুল ইসলাম টিপু, জসিম উদ্দিন, নগর ছাত্রদল নেতা মো. শফিকুল আলম, সালাউদ্দিন আলী, নুরুল আলম শিপু, মো. মান্নান উদ্দিন, সাইফুদ্দিন, জিললুর রহমান জুয়েল, আবদুল কাদের খোকন, শাহ আলম, আকবর আলী, মনিরুল ইসলাম জনি, যুবদল নেতা ইয়াছিন, মো. শামিমুল হক, সাজ্জাদ হেসেন সাজু, মহিউদ্দিন মুকুল, মোহাম্মদ হাসান, ছাত্রনেতা মো. মহরম, সানজিদুল আলম ফয়সাল, মো. পারভেজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পরে মীর নাছির বিশাল গাড়িবহর নিয়ে চট্টগ্রাম পুরাতন রেলস্টেশন থেকে হাটহাজারী মীরের খিলে তাঁর গ্রামের বাড়িতে বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাত করেন।