২ মাস পর মামলা, একজন রিমান্ডে

এনটিভি অনলাইনে সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে দুই মাস পর দরিদ্র কিশোরী শারমিন আক্তারের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা নিল পুলিশ। এই ঘটনায় সজীব (২২) নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সজীবের বাড়ি নরসিংদীর পলাশ উপজেলার দক্ষিণ পলাশ এলাকায়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সজীবকে নরসিংদীর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠিয়ে পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। আদালত সজীবের সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, কিশোরী শারমিনের মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা হত্যা মামলা করেছেন। সজীব নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই শারমিনের মৃত্যুর মূল রহস্য উদঘাটন করা হবে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ জুলাই রাত ৯টার দিকে ঘোড়াশাল ভূঁইয়ার ঘাট এলাকা থেকে শারমিন আক্তার নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর পরের দিন ভোর ৫টায় বাড়ির পাশের একটি সুপারি গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় তাকে দেখতে পায় এলাকাবাসী। এ সময় তার পা মাটির সঙ্গে লেগে ছিল বলে দাবি পরিবারের। খবর পেয়ে পলাশ থানা পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহত কিশোরীর মা রুকসানা বেগম গত ৫ সেপ্টেম্বর এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমার মেয়েকে সন্ত্রাসীরা দুই মাস আগে শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে নিয়ে রাতভর ধর্ষণ করে। সেখান থেকে ভোরে অসুস্থ অবস্থায় আমার মেয়েকে উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় প্রভাবশালীদের কারণে আজ পর্যন্ত আমি মামলা করতে পারিনি। হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করেও তা পারিনি।’
রুকসানা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ের গলায়, দুই পায়ে ও কোমরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিল। আমার প্রশ্ন, এখন ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসতে এত সময় কেন? আপনারাই বলেন। আমি শুধু চাই, আমার মেয়ের কী হয়েছিল, তা জানতে। পুলিশ প্রশাসনের কাছে একটাই চাওয়া, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এনে আমার মেয়ের খুনের রহস্য উদ্ঘাটন করা হোক।’
কিশোরীর মা আরো জানান, এলাকার কয়েকজন বখাটে তাঁর মেয়েকে হত্যা করেছে। তারা এখন তাঁর বাড়িতে ককটেল মেরে হুমকি দিচ্ছে। তিনি এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অভিযুক্ত বখাটেদের নাম জানতে চাইলে রুকসানা বেগম ভয়ে কিছু বলতে পারেননি। একপর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মামলা না নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তখন পলাশ থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, কিশোরীর মৃত্যুর ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের জন্য মামলার কার্যক্রম অপেক্ষমাণ আছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য গত সপ্তাহেও সিভিল সার্জন কার্যালয়ে তাগাদাপত্র দেওয়া হয়েছে।
এ নিয়ে সোমবার দিবাগত রাতে এনটিভি অনলাইনে ‘ধর্ষণের’ পর হত্যা, ২ মাসেও আসেনি ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরদিন একটি জাতীয় দৈনিকেও সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরই নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন।