চট্টগ্রামে ২০০ টাকায় গরুর চামড়া বিক্রি!

চট্টগ্রামে কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বিপুলসংখ্যক ব্যবসায়ী। চামড়া বিক্রি না হওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। নগরীর পাঁচলাইশ আতুরার ডিপো এলাকায় চামড়ার ন্যায্যমূল্য না পেয়ে পথে বসেছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে প্রতিটি চামড়া ৭০০ ও ৮০০ টাকা করে কিনে আড়ত এলাকায় পৌঁছাতে এক হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু প্রতিটি চামড়ায় এখন ২০০ টাকার বেশি পাওয়া যাচ্ছে না। চট্টগ্রামে ২২টি চামড়া ট্যানারির মধ্যে ২০টি ট্যানারি আগে বন্ধ হয়ে গেছে। লবণ দিয়ে আড়তে চামড়া সংরক্ষণ করা হলেও এবার লবণের মূল্যবৃদ্ধির কারণে অনেকে চামড়া কেনা বন্ধ রেখেছেন। ঢাকা থেকে চামড়া ব্যবসায়ীরা না আসায় পণ্যের মূল্য কমে গেছে বলে জানা যায়।
পাঁচলাইশে মৌসুমি ব্যবসায়ী মাহবুব আলম বলেন, ‘৮০০ টাকা করে চামড়া কিনছি। এর ওপর গাড়ি ভাড়া আছে। ২৪৭টা চামড়া আনছি। এখন ২০০ টাকা করে বিক্রি করতেছি।’
আরেক মৌসুমি ব্যবসায়ী আবদুল কাদের বলেন, ‘চামড়াগুলো কী করব বলেন? পেট্রল দিয়ে জ্বালায়ে দিব? আমরা ছয় লাখ টাকা ইনভেস্ট করছি। এখন হাতে এক লাখ টাকাও নাই। মাল নিয়ে ঘুরতেছি। মাল নেয় না। বলে লবণ দিয়ে রাখব। বিক্রি হলে এসে টাকা নিয়ে যাইস।’
চট্টগ্রামে চামড়ার এক আড়তদার হাজি শাহাবুদ্দিন জানান, এবার ঢাকা থেকে কোনো ব্যবসায়ী না আসায় তাঁরা হতাশ। এ কারণে তাঁরা এবার চামড়া কেনেননি বললেই চলে। যাও কিনেছেন কম দামে, ঝুঁকি নিয়ে। ওই চামড়ায় লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করে রাখবেন। ঢাকা থেকে ব্যবসায়ীরা এলে তারপর ওই চামড়া বিক্রি করতে পারবেন।
চামড়ার ব্যবসাসংশ্লিষ্ট তিনটি ব্যবসা সংগঠন ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণের বিষয়টি জানায়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজধানীতে লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট সর্বোচ্চ ৫০ টাকা, রাজধানীর বাইরে ৪০ টাকা। এ ছাড়া খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট সর্বোচ্চ ২০ টাকা, বকরির চামড়া দাম প্রতি বর্গফুট ১৫ টাকা ও মহিষের চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই হিসাবে ঢাকার বাইরে একটি গরুর চামড়ার দাম পড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা।