চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাল্টার ফলন ভালো

সুমিষ্ট আমের জেলা হিসেবে খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার ব্যাপক ভিত্তিতে শুরু হয়েছে মাল্টার চাষ।
বরেন্দ্রর রুক্ষ মাটিতে পরীক্ষামূলক চাষেই বাম্পার ফলন এ অঞ্চলে মাল্টা চাষে নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করেছে। এরই মধ্যে বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রায় আড়াইশ বিঘা জমিতে গড়ে উঠেছে মাল্টা বাগান। ভালো মানের মাল্টা উৎপাদনের ফলে পুষ্টি চাহিদার পাশাপাশি অর্থনীতিতেও দেখা দিয়েছে নতুন সম্ভাবনা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঝিলিম ইউনিয়নের জামতলায় ১০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে ফলের বাগান গড়ে তুলেছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের গাড়িচালক মতিউর রহমান। স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার। মাল্টা চাষের সুপ্ত বাসনা থেকে বরেন্দ্রর রুক্ষ মাটিতে পেয়ারা, আম, কুল, বেদানা চাষের পাশাপাশি তিনি ২০১৩ সালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত ‘বারি মাল্টা-১’ চারা লাগিয়েছিলেন তাঁর মোনামিনা নার্সানিতে। মাত্র দুই বছরেই সাফল্য ধরা পড়ে মতিউরের হাতে। দুই বিঘার মাল্টা বাগান থেকে মাল্টা ও চারা বিক্রি করে এ বছরই আয় করেছেন প্রায় ১১ লাখ টাকা। মতিউরের সাফল্যে এখন বাগানের পর বাগান গড়ে উঠছে বরেন্দ্রর বুকে।
এদিকে, আমনুরা আঞ্চলিক সড়কের পাশে মতিউরের মোনামিনা নার্সারি থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা মাল্টার অভাবনীয় দৃশ্য দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন ফলপ্রেমীরা। সবুজ পাতার বুকে হলুদ মাল্টার হাতছানিতে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা। সেইসঙ্গে খুশি বাগান-মালিকের পরিবারও।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাজারে আমদানি করা মাল্টায় ৯ শতাংশ মিষ্টিস্বাদ থাকলে বরেন্দ্রের মাল্টায় পাওয়া গেছে ১৩ থেকে ১৪ শতাংশ। এখানকার মাটিতে ভালো ফলনে মাল্টা চাষের দারুণ সম্ভাবনা দেখছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ কল্যাণপুর হর্টিকালচার সেন্টারের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ জহুরুল ইসলাম ও সাইফুল ইসলাম।
আমের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের উৎপাদিত মাল্টা দেশের পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে একদিন রপ্তানি তালিকায় যুক্ত হবে বলে মনে করেছেন সংশ্লিষ্টরা।