নবীগঞ্জে স্কুলছাত্র অনুপের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় স্কুলছাত্র অনুপ দাস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে উপজেলার কীর্তি নারায়ণ কলেজের সামনে রাস্তায় তার সহপাঠীরা এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধনে ফেস্টুন, ব্যানার, অনুপের ছবি ও ‘খুনিদের ফাঁসি চাই’ লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্থানীয় স্কুল, কলেজের ছাত্রছাত্রী, জনপ্রতিনিধি ও যুব সমাজের নেতারা অংশ নেয়।
মানববন্ধন শেষে এক পথসভায় বক্তব্য দেন নবীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বড় ভাকৈর ইউনিয়নের হালিমপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মনোরঞ্জন দাস, নিহত অনুপের মা ঊষা রাণী দাস, তার বড় বোন এসএসসি পরীক্ষার্থী সুমি রানী দাস, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শুভাস চন্দ্র দাস, কীর্তি নারায়ণ কলেজের ইংরেজি বিষয়ের প্রভাষক টিটু দাস, বিবিয়ানা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিমল কান্তি দেব, ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মাহমুদ মিয়া, শুশাংক দাস, ইউসুফ আহমেদ প্রমুখ।
বক্তরা বিবিয়ানা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র অনুপ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। নিহত অনুপের মা ঊষা রানী তাঁর একমাত্র ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানান।
বড় বোন সুমি রানী দাস কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার বাবাকে গত বছর পাষণ্ডরা হত্যা করেছে। কোনো বিচার পাই নাই। এ বছর আমার ভাইকে মেরে স্যানেটারি রিং ল্যাট্রিনের ভেতরে ফেলে রাখে।’ তিনি তাঁর বাবা ও ভাইয়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
নবীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বড় ভাকৈর ইউনিয়নের প্রয়াত অন্তু দাসের ছেলে অনুপ দাস (১৩) গত ৩০ নভেম্বর রাতে হলিমপুর বাজারে নিজ দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়। বাড়ির লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে। পরে হলিমপুর গ্রামের ভূষণ দাসের দোকানের উত্তর- পূর্ব পাশের খালে কিশোর অনুপ দাসের ব্যবহৃত চাঁদর ও জুতা পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে গত ১ ডিসেম্বর উষা রানী দাস নবীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এ ঘটনায় ৩ ডিসেম্বর বিকেলে হলিমপুর গ্রামের গোপাল দাস (৫০), অধীর দাস (৫৫), পিন্টু দাসকে (৪২) সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ আটক করে। গত ৩ ডিসেম্বর নবীগঞ্জ থানায় মামলা করেন ঊষা রানী দাস। ওই দিন বিকেলে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে হলিমপুর গ্রামের দীপংকর দাসকে পুলিশ আটক করে।
আটক দীপংকর দাসকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে দীপংকর ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যানুযায়ী একই গ্রামের জ্যোতির্ময় দাসের বাড়ির স্যানেটারি রিং ল্যাট্রিনের ভেতর থেকে অনুপের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
অনুপের বাবা অন্তু দাস ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। ঘটনার দুইদিন পর বাড়ির পশ্চিমে বিবিয়ানা নদীর পাড়ে তাঁর লাশ পাওয়া যায়।