ডেঙ্গুকে ‘জরুরি পরিস্থিতি’ ঘোষণাসহ ৯ দাবি বাসদের
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণসহ জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ‘জরুরি পরিস্থিতি’ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ। পাশাপাশি ঢাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে চিকিৎসাকেন্দ্র নির্মাণ, বিনামূল্যে ডেঙ্গু টেস্ট ও চিকিৎসা করা, নগরীর জলাবদ্ধতা দূর এবং দখল-দূষণ বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে রাজনৈতিক দলটি।
আজ বুধবার (১৬ আগস্ট) বাসদের ঢাকা মহানগর শাখা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মেয়র বরাবর স্মারকলিপি দিয়ে এসব দাবি জানানো হয়। স্মারক লিপি দেওয়ার আগে দলটি নগর ভবনের সামনে সমাবেশ করে।
স্মারকলিপিতে থাকা বাসদের দাবিগুলো হচ্ছে-
১. ডেঙ্গু মহামারি পরিস্থিতিকে ‘জরুরি পরিস্থিতি’ ঘোষণা করা।
২. বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা ও চিকিৎসা করা, ঢাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে অস্থায়ী ডেঙ্গু পরীক্ষা ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ করা।
৩. হাসপাতালগুলোতে আপদকালীন পর্যাপ্ত চিকিৎসক-নার্সের ব্যবস্থা করা, সিট ও স্যালাইন সংকট নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া।
৪. এডিস মশা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে কীটতত্ত্ববিদ, জনস্বাস্থ্যবীদ, স্থানীয় সরকারসহ সব অংশীজনের সমন্বয়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম জোরদার করা।
৫. জলাবদ্ধতা নিরসনে দখল করা সব খাল, পুকুর ও জলাশয় উদ্ধার এবং ওয়াসার সব পাম্প সচল করা।
৬. অপরিকল্পিত নগরায়ণ বন্ধ করা, দখল-দূষণ রোধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা, খাস জমি উদ্ধার করা।
৭. মশানিধন কার্যক্রম-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম, দুর্নীতি ও দায়িত্বে অবহেলার বিষয়গুলো তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের শাস্তির আওতায় আনা।
৮. দুই সিটি করপোরেশনকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা।
৯. উপযুক্ত কীটনাশক ও এর চাহিদা নির্ধারণ, ক্রয়, কার্যকরিতা ও সহনশীলতা পরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে বিশেষজ্ঞ কারিগরি কমিটি করতে হবে, তাদের কার্যক্রম নিয়মিত হতে হবে এবং সভাগুলোর কার্যবিবরণী প্রকাশ করতে হবে। অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধে কীটনাশক ক্রয় প্রক্রিয়ায় জাতীয় ক্রয় আইন ও বিধিমালা অনুসরণ করতে হবে।
সমাবেশে বাসদের নেতারা বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর দেশের ডেঙ্গুরোগীর অর্ধেকই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের। ডেঙ্গুতে যত মৃত্যু তার প্রায় ৭৬ শতাংশই ঢাকার। চলতি আগস্ট মাসকে ভাবা হচ্ছে ডেঙ্গুর পিক সিজনের সময়। তার ওপরে আবার গত দুই সপ্তাহ ধরে হয়ে যাওয়া বর্ষণ ও জলাবদ্ধতা ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব লাগামছাড়া করে ফেলছে।
তারা আরও বলেন, ৪২টি খাল ও চারটি নদী পরিবেষ্টিত ঢাকা মহানগর, অথচ সেই ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতার সংকট এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সামান্য বৃষ্টিতেই জলজট ও যানজটে নগরবাসী নাকাল। ঢাকার বেশিরভাগ খাল, পুকুর ও জলাশয় দখল হয়ে গেছে। দখল দূষণে চারটি নদীর অবস্থা মৃতপ্রায়। ওয়াসার পাম্প স্টেশনগুলো নষ্ট,। ফলে নদী, খাল, পুকুর ও জলাশয় থাকার পরও ঢাকার নিষ্কাশন ব্যবস্থার ভঙ্গুর দশা। দখল-দূষণ থেকে ঢাকা শহরকে রক্ষার কার্যকর উদ্যোগের ঘাটতি দৃশ্যমান।