জাতীয় ঐক্যসহ তিন বিষয়ে একমত পোষণ সরকারবিরোধীদের
বিদ্যমান সংকটময় পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দল, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও বিভিন্ন পেশাজীবী প্রতিনিধিদের সঙ্গে জাতীয় সংলাপ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এই সংলাপে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন বর্জন, সরকারের পতন এবং রাষ্ট্র মেরামতে জাতীয় ঐক্য গঠনের বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন সরকারবিরোধীরা। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উদ্যোগে আজ মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে এক জাতীয় সংলাপে অংশগ্রহণকারী এই তিন বিষয়ে একমত পোষণ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘আপনাদের বক্তব্যেগুলো গভীরভাবে শুনেছি। অচিরেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে সামনে আমাদের করণীয় জাতীয় ও জনগণের সামনে উপস্থাপন করব।’ তিনি বলেন, ‘এই সরকারেরর যে অন্যায় ও জুলুম, সেটা বাস্তবে যদি ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের প্রহসন তারা করতে চায়, আমি আজকে জাতীয় সংলাপে যারা উপস্থিত হয়েছে তাদের সবার ঐক্যমতে দেশের সব জনগণ ও ভোটাদের আহ্বান করব—আমরা কেউ যেনো ৭ জানুয়ারি এই পাতানো নির্বাচনের ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত না হই।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এই সংলাপ বহু বছর আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে থাকবে। আমরা যারা সরকার পতনের একদফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করছি, তারা সবাই এখানে এসেছে। বাম-ডান সবাই এসেছে। এজন্য এই সরকারকে ধন্যবাদ দিতে পারেন যে, তাদের অত্যাচার, নিপীড়ন, অন্যায় ও জুলুম কারণে আজকে আমাদের সবাইকে এক কাতারে নিয়ে এসেছে। আজকে আমরা সবাই মজলুম।’
দেশে বিভিন্ন সময়ে নির্বাচনকালীন সরকারের বিভিন্ন উদাহরণ টেনো নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর অধীনে কোন বিশ্বাসে আমরা নির্বাচনে যাব? তার বিবেচনায়ই তো যাওয়া উচিত নয়। আর এখন যুক্তির বিষয় নয়, এখন জবরদস্তির ব্যাপার। সেই জবরদস্তিতে যারা সহযোগিতা করছেন এবং যারা জবরবস্তি করছেন, তারা সবাই দেশের জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন। সুতরাং, আজকের জনগণের সঙ্গে জনগণের অধিকার হরণকারী ও বঞ্চিতকারী এবং জনগণের অধিকার তছনছ করছে যারা তাদের লড়াই। এই সিদ্ধান্তে আমরা যারা এখানে উপস্থিত আছি, তারা সবাই যোগ দেব।’
সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের সভাপতিত্বে সংলাপে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, এলডিপির একাংশের মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, গণসংহতি আন্দোলনের বাচ্চু ভূঁইয়া, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এনডিপি চেয়ারম্যান কে এম আবু তাহের, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি এম আবদুল্লাহ, খেলাফত মজলিসের ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল, সম্মিলিত ওলামা মাশায়েখ পরিষদ সভাপতি খলিলুর রহমান মাদানী, গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মন্জু, সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর, বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আব্দুল লতিফ মাসুম, জাগপার সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, গণঅধিকার পরিষদের আরেক অংশের যুগ্ম আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য দেন।