সাফারি পার্ক থেকে দেয়াল টপকে ফের পালিয়েছে নীলগাই
গাজীপুরের সাফারি পার্ক থেকে দেয়াল টপকে ফের একটি নীলগাই পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পালিয়ে যাওয়া নীলগাই পার্কে ফিরিয়ে আনতে গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলায় অভিযান চালাচ্ছে বনবিভাগ।
পার্ক কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতিষ্ঠাকালীন নিচু সীমানা প্রাচীর টপকে পালিয়েছে নীলগাইটি। দ্রুত সময়ের মধ্যে পুরোনো সীমানা প্রাচীরের জায়গায় নতুন সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা না হলে আরও প্রাণী পার্ক বেষ্টনি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সাফারি পার্কের পুরোনো সীমানা প্রাচীর টপকে গত ১৬ জানুয়ারি একটি নীলগাইটি পালিয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে সেটিকে পার্কে ফিরিয়ে আনতে কাজ শুরু করে বনবিভাগ। বর্তমানে সেটি গাজীপুর জেলার শ্রীপুর, ময়মনসিংহের ভালুকার সিডস্টোর, বাটাজোর ও টাঙ্গাইলের সখিপুর এলাকায় বিচরণ করছে। এটি ১৮ জানুয়ারি শনিবার সকালে ময়মনসিংহের বাটাজোর বাজার এলাকায়, বিকেল ৫টার দিকে টাঙ্গাইলের সখিপুর থানার কালমেঘা এলাকায় দেখা যায়। তাৎক্ষণিকভাবে ওই এলাকায় যায় বনবিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। গিয়ে নীলগাইয়ে খোঁজ করে এবং পরবর্তী সময়ে তার সন্ধান পেলে বনবিভাগকে জানাতে অনুরোধ করে। সবশেষ ১৯ জানুয়ারি রোববার পার্কের পাশে শ্রীপুর উপজেলার জয়নাতলী এলাকায় খোঁজ পাওয়া যায় নীলগাইটির। পার্ক কর্তৃপক্ষ ও বনবিভাগ পৌঁছে ধরার জন্য বেড় তৈরি করার সময় কুকুর ধাওয়া দিলে নীলগাইটি দৌড়ে পালিয়ে যায়। রাত সাড়ে ৩টার দিকে ফের এর সন্ধান মেলে। সোমবার ও মঙ্গলবার তার কোনো খোঁজ মেলেনি।
নীলগাইয়ের খোঁজে এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে, পাশাপাশি স্থানীয়দের সতর্কও করা হচ্ছে।
পার্ক সূত্রে জানা গেছে, পার্কের হরিণ বেস্টনিতে রাখা ছিল ১১টি নীলগাই। প্রজনন মৌসুমে মাদী নীলগাই সঙ্গী পেতে পুরুষ নীলগাইয়ের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। গত ১৬ জানুয়ারি পুরুষ নীলগাইয়ের মধ্যে সংঘর্ষের একপর্যায়ে একটি পুরুষ নীলগাই হরিণ বেষ্টনির পাঁচ ফুট উচ্চতার সীমানা প্রাচীর টপকে ওয়াইল্ডবিস্ট বেস্টনি হয়ে পার্কের বাইরে চলে যায়।
এর আগেও ২০২১ সালে পার্ক থেকে একটি নীলগাই পালিয়ে যায়। দুই মাস পর টাঙ্গাইলের মধুপুর থেকে সেই সেটি উদ্ধার করে পার্কে আনা হয়েছিল।
২০১৯ সালে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জব্দ হওয়া চারটি নীলগাই সাফারি পার্কে আনা হয়। সেখানেই তারা নতুন বাচ্চার জন্ম দিয়ে দলের সংখ্যা বাঁড়িয়েছে।
পার্ক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, সাফারি পার্কে সর্বশেষ ১১টি নীলগাই ছিল। একটি নীলগাই পালিয়ে যাওয়ায় এখন সেখানে রয়েছে ১০টি।
এ বিষয়ে সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, পার্কের প্রায় সাত হাজার ফুট সীমানা প্রাচীর জরাজীর্ণ, যেকোনো সময় ধ্বসে যেতে পারে সীমানা প্রাচীর। এ ছাড়া গত বর্ষায় পানি আটকে পার্কে সীমানা প্রাচীরের বেশ কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বিভিন্ন জায়গায় সীমানা প্রাচীর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে জরাজীর্ণ সীমানা প্রাচীরের সরিয়ে নতুন সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা না হলে পার্কের হিংস্র প্রাণীসহ অন্যান্য প্রাণীও লোকালয়ে চলে যেতে পারে।