এক-এগারোর ভয়াবহ পরিণতি বিএনপির চেয়ে বেশি কেউ ভোগ করেনি : মির্জা আব্বাস
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘আজকে অনেকে স্বাধীনতা পেয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছেন। কেউ কেউ বলছে, বিএনপি আবারও এক-এগারো আনার পাঁয়তারা করছে। অথচ ১/১১-এর ভয়াবহ পরিণতি বিএনপির চেয়ে বেশি কেউ ভোগ করেনি। খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে দলের এমন কোনো নেতাকর্মী এ থেকে রেহাই পায়নি। এভাবে কথা বললে দেশের গণতন্ত্রের চেহারা কেউ দেখতে পারবে না।’
আজ শুক্রবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় আরাফাত রহমান কোকোর দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা আব্বাস।
বিএনপিনেতা মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আরাফাত রহমান কোকোকে চৌকসভাবে হত্যা করা হয়েছে। একদিকে মা অসুস্থ, ভাইকে শারীরিকভাবে নিষ্ঠুরতম অত্যাচার করে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। তখন কোকোকে অসুস্থ অবস্থায় দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়। আর লাশ হয়ে দেশে ফিরেন।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ইতিহাসে শহীদ জিয়া এবং তার পরিবারের ইতিহাস বিরল। খালেদা জিয়া তার স্বামী হারিয়েছেন, সন্তান হারিয়েছেন। বিনাদোষে সাত বছর বন্দি ছিলেন। আজ অনেকে জিয়া পরিবারের অবদানকে অবজ্ঞা করছেন। এই অবজ্ঞা শুধু জিয়া পরিবারকে নয়, দেশ ও গণতন্ত্রের প্রতি অবজ্ঞা।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে স্লো পয়জনের মাধ্যমে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া মানে গণতন্ত্রকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘শিশুদের যখন নতুন দাঁত ওঠে, তখন বাচ্চারা উল্টাপাল্টা কথা বলেন। এখন কেউ কেউ এমনভাবে কথা বলছেন, যেন বিএনপি আওয়ামী লীগের দোসর। বিএনপি ভারতের দোসর। যারা এগুলো বলছেন, তারা নিজেরা নিজেদের চেহারা আয়নায় দেখুন।’
বিএনপিনেতা মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমার ১১ বছর জেল হয়েছে, আমার স্ত্রী ১৬ বছর, আমার ছোট ভাইয়ের আট বছর সাজা হয়েছে। এমনি করে বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নির্যাতন-নিপীড়ন হয়েছে। আর আজ আমাদেরকে আওয়ামী লীগের সিল বানাতে চান। চক্রান্ত যা-ই করেন, আমরা বুঝি। বিএনপি কিছু বললেই সমস্যা।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘অনেকে বিদেশে বসে জ্ঞান দিচ্ছেন। এতে দেশের শান্তি বিনষ্ট হচ্ছে। আপনাদের যে প্রজ্ঞা আছে, তা দেশের কাজে লাগান। অনেকে বলেন, নতুন দল গঠিত হচ্ছে বিএনপি জেলাসি করছে। যারা এগুলো বলছেন, তারা জাতির শত্রু। বিএনপি গণতান্ত্রিক দল। যেকোনো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকেই স্বাগত জানায়। তবে, জনসমর্থন আদায় করতে হলে জনগণের পালস বুঝতে হবে।’
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘আজকে অনেকে বলছেন, ৫ আগস্ট যারা এনেছেন, সবকিছুর অধিকার তাদের। যারা ১৭ বছর নির্যাতনের শিকার হয়েছে, খুন হয়েছে, গুম হয়েছে, তাদের কী হবে? আমি নিজেও ১৩ বার জেল খেটেছি। আমাদের কোনো অবদান নেই! এগুলো বলে জাতির মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করবেন না।’
কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘গাছে কাঠাল গোঁফে তেল। একটি দল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য পাগল। সুযোগ পেলেই বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছেন।’
দোয়া মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহস্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, সহপ্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, সহযুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, কেন্দ্রীয় সদস্য শামসুজ্জামান মেহেদী, মাহবুব আলম, মসিউর রহমান বিপ্লব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক রফিকুল আলম মজনু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজিব এহসান, সিনিয়র সহসভাপতি ইয়াসিন আলী, সহসভাপতি ডা. জাহিদুল কবির, রফিকুল ইসলাম, ছাত্রদলের সহসভাপতি ডা. তৌহিল আউয়াল ও মৎসজীবী দলের সাবেক সদস্য সচিব আব্দুর রহিমসহ অন্যান্যরা।