পরিত্যক্ত প্লাস্টিক রিসাইক্লিংয়ে তৈরি হচ্ছে কর্মসংস্থান
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/10/nilphamari.jpg)
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে ফুটপাত থেকে কুড়িয়ে পাওয়া ব্যবহৃত পরিত্যক্ত বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক রিসাইক্লিং করে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে। এটি পরিবেশ দূষণ রোধের পাশাপাশি অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখছে।
সম্প্রতি সরজমিনে উপজেলার পুটিমারী শ্বসান বাজার এলাকায় হিমন প্লাস্টিক রিসাইক্লিং কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, ময়লা আবর্জনার স্তুপ থেকে সংগ্রহ করা পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল বাছাই করে রিসাইক্লিংয়ের জন্য প্রস্তুত করছেন শ্রমিকেরা। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসব বোতল পরিষ্কার করে কাটিং মেশিনের মাধ্যমে টুকরো করে পাঠানো হয় রাজধানীতে। টুকরো করা প্লাস্টিক যায় বিভিন্ন কোম্পানিতে। সেখানে তৈরি হয় নতুন পণ্য।
কারখানায় কাজ করা নারী শ্রমিক মেঘলা রানী বলেন, ‘আগে মানুষের জমিতে সারা দিন কৃষি কাজ করতাম। এখন এখানে ৮ ঘণ্টা কাজ করে ৪০০ টাকা মজুরি পাই। এখানে আমি বোতলের স্টিকার খোলার কাজ করি। কাজে কোনো ধরনের সমস্যা নেই, বসে বসে কাজ করি।’
আরেক শ্রমিক আলামিন ইসলাম বলেন, ‘আমি আগে অভাবের সংসারে ঢাকায় গিয়ে বিল্ডিং তৈরির কাজ করতাম। মাঝখানে পড়ে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যাই। তারপর এখানে এসে কাজ শুরু করি।’
শ্রমিকেরা প্লাস্টিকের পণ্যগুলো ভাগ করে রাখেন। সে সব দ্রব্য নিয়ে এসে মেশিনে দিয়ে কুচি তৈরি করা হয়। এরপর এসব কুচি ওয়াস মেশিনে পরিষ্কার করে রোদে শুকানো হয়। পরে প্যাকেট জাত করে প্রস্তুত করা হয় বিক্রির জন্য।
প্লাস্টিক সংগ্রহ করে নিয়ে আসা এক ব্যবসায়ী বলেন, বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে ঘুরে এসব প্লাস্টিক সংগ্রহ করি। যা এখানে নিয়ে এসে বিক্রি করে, সেটা দিয়ে আমাদের সংসার চলে। মানুষের ব্যবহৃত প্লাস্টিক ফেলে না দিয়ে এখন মানুষ জমা করে রাখে। সেগুলো কিনে এনে আমি এখানে বিক্রি করি।’
কারখানার মালিক আহসান হাবীব বলেন, ‘আমি এখানে কারখানা করেছি যেন আমার এলাকার কিছু লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারি। আমি এটি পরীক্ষামূলক চালু করেছিলাম কিন্তু বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। তাই সরকার যদি আমাকে লোনের ব্যবস্থা করে দিত তাহলে আমি কারখানাটি আরও বড় পরিসরে করতে পারতাম।’
কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী হক বলেন, ‘প্লাস্টিক রিসাইক্লিং কারখানা দেশের পরিবেশের জন্য ভালো। প্লাস্টিক দূর করতে কারখানাগুলো অনেক ভূমিকা রাখছে। আমরা বিভিন্ন ব্যাংকের সঙ্গে চাইলে ব্যবসায়ীদের যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারি। আশা করি তারা সহজ শর্তে সেখান থেকে লোন নিতে পারবে। এছাড়া ব্যবসায় লাভবান হতে নানা প্রশিক্ষণেরও আয়োজন করা যেতে পারে।’
নীলফামারী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কমল কুমার বর্মণ বলেন, ‘ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে পরিবেশ তার দূষণের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে। পাশাপাশি এসব কারখানায় কাজ করে অনেকেই হচ্ছেন স্বাবলম্বী হচ্ছেন।’