ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বরিশালের উজিরপুরে সন্ধ্যা নদীতে অপহৃত ট্রলারচালক মাহাবুব হাওলাদারের সন্ধানে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে ইচলাদী বাসস্ট্যান্ডে মানববন্ধন করেছে প্রায় দুই হাজার এলাকাবাসী। মানববন্ধনের কারণে প্রায় তিন ঘণ্টা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।

মানববন্ধনে নিখোঁজ মাহবুবের বড় ভাই মো. জামাল হোসেন বলেন, ‘আমার ভাই একজন নিরীহ মানুষ। তিনি ট্রলারচালক। তাকে বিনা কারণে অপহরণ করা হয়েছে। আজ ১১ দিন পর্যন্ত আমরা তাকে খুঁজে পাচ্ছি না। আমরা তাকে জীবিত অবস্থায় চাই।’

ঘাটের ইজারাদার ও নিখোঁজ মাহবুবের ভাই জামাল হোসেন জানান, তার ভাইকে খোঁজ না দেওয়া পর্যন্ত ট্রলার বন্ধ থাকবে।

এসময় নিখোঁজ মাহবুবকে উদ্ধারে ৪৮ ঘণ্টা আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধার না হলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মাহাবুল হাওলাদার উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের পশ্চিম মুন্ডপাশা গ্রামের সেকান্দার হাওলাদারের ছেলে। শিকারপুর খেয়াঘাটে নিয়মিত পারাপারের জন্য ট্রলার চালাতেন। ঘটনার দিন ৩১ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে ৮ থেকে ১০ জন তরুণ ও কিশোর যাত্রী তার ট্রলারে ওঠে। নদীর মাঝখানে পৌঁছালে হঠাৎ চিৎকার শোনা যায়। তবে আশপাশে অন্য কোনো ট্রলার না থাকায় কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি।

নদীর পাড়ে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনদের ধারণা পূর্ব শত্রুতার জেরে অথবা চাঁদাবাজদের চাঁদা না দেওয়ার কারণে পরিকল্পিতভাবে তাকে অপহরণ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় বাবুগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি ও পরে নিয়মিত একটি মামলা করা হয়েছে। এদিকে উভয় থানার পুলিশ অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দেন উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলী সুজা ও সহকারী পুলিশ সুপার মো. ইকরামুল আহাদ। তারা পরিবারকে মানববন্ধন স্থগিত করার অনুরোধ করে নিখোঁজকে খুঁজে বের করার প্রতিশ্রুতি দেন।

উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, বাবুগঞ্জ থানা পুলিশ ও উজিরপুর থানা পুলিশ যৌথভাবে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে। তিন ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করার ফলে কয়েক হাজার যানবাহন বন্ধ হয়ে যায়। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে মানববন্ধন প্রত্যাহার করা হয়।