মহাসড়কে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে রাশি রাশি পলাশ ফুল
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/12/plaash_3.jpg)
কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গেলে ‘আহা আজি এ বসন্তে এত ফুল ফুটে, এত বাঁশি বাজে এত পাখি গায়’—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত গানের এই কথাগুলো মনে পড়ে যাবে যে কারও। ঋতুরাজ বসন্তের আগমনী বার্তা দিচ্ছে প্রকৃতি। মাঘের আরও একদিন বাকি থাকলেও প্রকৃতি সাজতে শুরু করেছে ফুলে ফুলে। মহাসড়কেও দেখা যাচ্ছে আগুনরাঙা পলাশ ফুলের সমারোহ। নান্দনিক সৌন্দর্যে প্রতিনিয়ত মুগ্ধ হচ্ছেন মহাসড়কে চলাচলকারী মানুষ।
আগুনরাঙা পলাশ সৌন্দর্য বিলাচ্ছে মহাসড়কের ১০০ কিলোমিটার অংশে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নতুন ও পুরনো সড়কদ্বীপে সারি সারি গাছে ফুটে আছে রক্তিম পলাশ ফুল। বাড়তি সৌন্দর্য যোগ করেছে পাখিদের কিচিরমিচির গান। পলাশ ফুলের এমন মোহনীয় রূপ এক ঝলক দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ। আবার যাত্রাপথে ব্যক্তিগত গাড়ি থামিয়ে পলাশের সঙ্গে ক্যামের বন্দি হচ্ছেন অনেকে। কেউ আবার গাছের তলা থেকে কুড়িয়ে নিচ্ছেন পলাশ ফুল।
সড়ক ও জনপদ (সওজ) কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা জানান, এখন পলাশ তার সৌন্দর্য বিলিয়ে যাচ্ছে। এতে যাত্রী-পথচারী সবার চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছে।
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2025/02/12/plaash_1.jpg)
ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার পথে পলাশ ফুলের ছবি তুলছিলেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাদের একজন অভিনাশ চক্রবর্তী বলেন, ‘মহাসড়কে এত পলাশ ফুল ফুটেছে। দেখেই শান্তি লাগছে। চোখ জুড়িয়ে যায় এমন সৌন্দর্যে।’
বাসচালক হাবিব মিয়া বলেন, ‘পলাশ ফুল দেখতে সুন্দর। বাসের যাত্রীদের অনেকে ফুলের সঙ্গে ছবি তোলে। আমিও গাড়ি থামিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করছি।’
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মেহেরুন্নেছা বলেন, ‘সংস্কৃতে পলাশ ফুলকে বলা হয় কিংশুক। পলাশ একটি পর্ণমোচি বৃক্ষ, যার পাতা শীতে ঝরে যায়। বৈজ্ঞানিক নাম Butea monosperma। Fabaceae গোত্রের এই উদ্ভিদের ফল দেখতে শিমের মতো হলেও এর আগুনরঙা ফুল আমাদের মনোজগতে চিরবসন্তের জাগরণী বার্তা নিয়ে হাজির হয়। টুকটুকে লাল কিংবা হলদে-লাল পলাশ ফুল দেখতে কিছুটা টিয়া পাখির ঠোঁটের মতো। ভালোবাসার আরেক নাম পলাশ।’
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2025/02/12/plaash_2.jpg)
আর নজরুলের গানে পলাশ এসেছে এভাবে...
হলুদ গাঁদার ফুল, রাঙা পলাশ ফুল
এনে দে এনে দে
নইলে বাঁধব না, বাঁধব না চুল...
শীতের রুক্ষতা আর জরাজীর্ণের পালে ভালোবাসার পাল তুলেছে বাংলার আনাচে-কানাচে এখানে-সেখানে ফুটে থাকা পলাশ। আমাদের নন্দনতত্ত্বে ভালোবাসার তিলক হয়ে থাকুক আমাদের টুকটুকে পলাশ। প্রতি বসন্তে প্রতিবার আমরা গাইব. ‘আমায় গেঁথে দাও না মাগো একটা পলাশ ফুলের মালা’।