যমুনা রেলসেতুতে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/12/ymunaasetu.jpg)
যাত্রী নিয়ে প্রথমবারের মতো যমুনা রেলসেতু পাড়ি দিল দুটি ট্রেন। এর মধ্য দিয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের নতুন রেল যোগাযোগ শুরু হলো।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা ১২ মিনিটে যমুনা রেলসেতু দিয়ে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে পাড়ি দেয়। পরে বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেন রেলসেতু পাড়ি দেয়।
যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসউদুর রহমান জানান, সেতুর দুটি রেল লাইনের মধ্যে একটি লাইনে আজ বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চালু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি ট্রেনগুলো চলবে। ফলে এখন থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে আর ট্রেন চলবে না।
আল ফাত্তাহ মাসউদুর রহমান আরও জানান, রেলসেতুতে দুটি লাইন থাকলেও আজ একটি লাইন দিয়েই উভয়দিকে ট্রেন চলাচল করবে। কাল ঢাকা থেকে যেতে ডান পাশের লাইন, অর্থাৎ সেতুর উত্তর পাশের লাইনটি দিয়ে ট্রেন চলবে।
১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ শুরু হয়। তবে ২০০৬ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হচ্ছে।
এ সমস্যা সমাধানে ২০২০ সালের ৩ মার্চ যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুর সমান্তরালে ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকের ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলসেতু নির্মাণের পরিকল্পনা অনুমোদন করে সরকার। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর রেল সেতুটির নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এরপর ২০২১ সালের মার্চে রেলসেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়।
প্রথমে প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা নির্ধারিত হলেও পরে তা ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ অর্থায়ন এসেছে দেশীয় উৎস থেকে এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি-জাইকা। দেশের বৃহত্তর এ রেলসেতুর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেছে জাপানি কোম্পানি ওটিজি ও আইএইচআই।
রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরালে ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকের এ রেলসেতু ব্যবহারের জন্য ৭ দশমিক ৬৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট এবং লুপ, সাইডিংসহ মোট ৩০ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হয়।