১৪ দিনের ভালোবাসায় ১৬ বছর পার করলেন বেবি আক্তার
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/14/thakurgao_bdr.jpg)
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের কচুবাড়ী জোতপাড়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মোতাহার হোসেন মানিক। ১৬ বছর আগে যোগ দিয়েছিলেন বিডিআরে। এরপর বাড়িতে এসে পরিবারের পছন্দে বিয়ে করেন। বিয়ের ১৪ দিনের মাথায় আটকা পড়েন পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলায়। তারপর একে একে জীবন থেকে ঝড়ে যায় ১৬টি বসন্ত।
অনেকে যেখানে স্বামীকে কাছে রেখেই ছোটেন অন্য পুরুষের দিকে, সেখানে বিডিআর মানিকের স্ত্রী বেবি আক্তার মাত্র ১৪ দিনের ভালবাসার সংসারের মায়া অগ্রাহ্য করতে পারেননি। নতুন করে বিয়ে না করে বছরের পর বছর স্বামীর অপেক্ষায় ছিলেন। বেবি আক্তার ভেবেছিলেন তার ভালোবাসার স্বামী হয়তো জেল থেকে আর কখনো ছাড়া পাবেন না।
গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ক্ষমতা নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর সঠিক বিচারে মুক্তি পান মোতাহার হোসেন মানিক। ১৬ বছর পর জেল থেকে ফিরে এসে দেখেন এখনও তার অপেক্ষায় আছেন সেই ১৪ দিন সংসার করা স্ত্রী।
মোতাহার হোসেন মানিক বলেন, ‘সম্পূর্ণ বিনা বিচারে আমি ১৬ বছর কারাগারে ছিলাম। যদি সঠিক বিচার হতো তাহলে আমাকে কারাভোগ করতে হতো না। ১৬ বছর পর মায়ের কোল ও স্ত্রীকে ফিরে পেয়ে অন্যরকম এক অনুভূতি হয়েছে। এটা বলে বোঝানো যাবে না। এ জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। মাত্র ছয় মাস চাকরির বয়সে বিনা অপরাধে ১৬ বছর জেলখানায় কেটে গেছে। ছয় মাস চাকরি আর ১৬ বছরের জেল। এই অল্প সময়ে কী অপরাধ করতে পারি?’
বেবি আক্তার বলেন, ‘আমাদের বিয়ের মাত্র ১৪ দিনের মাথায় আমার স্বামী বিনা অপরাধে কারাগারে চলে যান। তখন থেকে আমি আমার স্বামীর অপেক্ষায় ছিলাম। ভেবেছি জীবনে হয়ত কখনো তাকে ফিরে পাব না। দিন গড়িয়ে বছর হয়েছে, বছর গড়িয়ে দশক হয়েছে, তবু তার মুক্তি মেলেনি। ১৬ বছর পর এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। এখন আল্লাহর কাছে অনেক শুকরিয়া। আমার স্বামীকে ফিরে পেয়েছি। আমার ভালোবাসা এখন পূর্ণতা পেয়েছে। মন থেকে আল্লাহর কাছে কিছু চাইলে, আল্লাহ কখনও ফিরিয়ে দেন না। এই বিশ্বাসটা আমার ছিল। তাই হয়ত আজ ওনাকে আমি ফিরে পেয়েছি।’