ডিসি সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/16/yunus.jpg)
জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন আজ রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) শুরু হলো। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এদিকে আজ সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশ এডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশনের সভা অনুষ্ঠিত হবে। রাতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নৈশভোজে অংশ নেবেন ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনাররা।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রেওয়াজ থাকলেও এবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ডিসিদের সৌজন্য সাক্ষাতের সুযোগ রাখা হয়নি। ফলে এ বছর রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারদের সাক্ষাৎ হচ্ছে না।
গতকাল শনিবার বিকেলে সচিবালয়ে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এই সম্মেলনে ৩৪টি কার্য অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে ৩৫৪টি প্রস্তাব তুলে ধরা হবে। এসব প্রস্তাবের মধ্যে জনসেবা, জনদুর্ভোগ, রাস্তাঘাট নির্মাণ, আইন-কানুন ও বিধিমালা সংশোধন এবং জনস্বার্থের বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে আলোচনা হবে। প্রতিবছরই সম্মেলনের আগে এসব প্রস্তাব জমা পড়ে।
সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ বলেন, গত বছর ডিসি সম্মেলনে নেয়া সিদ্ধান্তের মাত্র ৪৬ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। আগের সরকারের অগ্রাধিকারমূলক অনেক বিষয় বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে না। এ কারণেই অনেক বিষয় কম বাস্তবায়ন হয়েছে। ভূমি ব্যবস্থাপনা, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রম জোরদার করা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পুনর্বাসন কার্যক্রম বাড়ানো, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হবে ডিসি সম্মেলনে।
সূত্র মতে ডিসি সম্মেলনে বিভিন্ন অধিবেশন প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, দিকনির্দেশনা গ্রহণ এবং সমাপনী অনুষ্ঠানসহ ৩৪টি কার্য-অধিবেশন থাকবে। সরকারের নীতিনির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনা-সামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেয়ার জন্য প্রতি বছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ ডিসি সম্মেলন।
ডিসি সম্মেলনে উপদেষ্টা-সচিবদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সম্পর্কে ডিসিদের দেয়া প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে। ডিসিরা মাঠপর্যায়ে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে থাকেন। সরকারের নীতিনির্ধারণী বিষয়, উন্নয়ন কর্মসূচি ও অন্যান্য বিষয়ে মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়নে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করে থাকেন ডিসিরা।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানায়, এবারের ডিসি সম্মেলন কার্য-অধিবেশনগুলো ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। তবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে কার্য-অধিবেশন এবং সমাপনী অধিবেশন সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নবনির্মিত ভবনে হবে। এসব অধিবেশন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব সভাপতিত্ব করবেন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টারা নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের কর্মসূচি মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য দিকনির্দেশনা দেবেন।
এবারের ডিসি সম্মেলন উপলক্ষে বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের কাছ থেকে ১ হাজার ২৪৫টি প্রস্তাব পায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ দ্বিমত করায় এবং আগের ডিসি সম্মেলনে উপস্থাপিত হওয়ায় অনেক প্রস্তাব এবারের কার্যপত্রে রাখা হয়নি। দ্বিতীয় দিন ১৭ই ফেব্রুয়ারি সোমবার কার্য-অধিবেশনের বাইরে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে ডিসিরা সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হবে ১৭ই ফেব্রুয়ারি। এ উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠান উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্টের দেয়া এক নথিতে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠান সোমবার বিকাল পৌনে ৫টা থেকে পৌনে ৬টা পর্যন্ত। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে আয়োজন করা হয়েছে এই অনুষ্ঠানের।
উল্লেখ্য, সরকারের নীতিনির্ধারক এবং জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের মধ্যে সামনা-সামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য সাধারণত প্রতি বছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। গত ৫ই আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে এ সম্মেলন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ডিসি সম্মেলন।