টঙ্গীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়কে শ্রমিকদের অবরোধ

গাজীপুরের টঙ্গী হোসেন মার্কেট এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বিএসআইএস কারখানার শ্রমিকরা। এতে দুই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন যাতায়াতকারীরা। অনেকেই হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন। শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে মৌচাকের আশপাশের সব কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকাল ৭টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা। পরে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায় বিএইচআইএস অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানায় ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন গত ৯ মার্চ দেওয়ার কথা ছিল। বেতন না দেওয়ায় গতকাল সোমবার সকাল থেকে কাজ বন্ধ করে কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। কারখানা কর্তৃপক্ষ সারা দিন শ্রমিকদের বেতন না দিয়ে নানা ধরনের টালবাহানা শুরু করে। পরে বিকেলে শ্রমিকরা বাড়ি ফিরে যান।
আজ মঙ্গলবার সকালে কাজে যোগ দিতে গিয়ে শ্রমিকরা দেখেন, কারখানার সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের নোটিশ সাটিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ওই নোটিশ দেখে শ্রমিকরা সকাল ৭টা থেকে কারখানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে শ্রমিকরা হোসেন মার্কেট ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের সামেনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করছে।

কারখানার সামনে দেওয়া নোটিশে বলা হয়েছে, ‘এতদ্বারা অত্র কারখানার সব কর্মী ও কর্মচারীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, ১০ মার্চ আনুমানিক সকাল ১০টার সময় কর্মী ও কর্মচারীগণ নিয়ম বহির্ভূতভাবে কাজ বন্ধ করে কারখানার অভ্যন্তরে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে। কর্মী ও কর্মচারীদেরকে কাজে যোগদানের জন্য বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কর্মী ও কর্মচারীরা কাজে যোগদান থেকে বিরত থাকে। কর্মী-কর্মচারীদের এই ধরনের আচরণ অবৈধ ধর্মঘটের শামিল। কর্তৃপক্ষ মনে করছে, উচ্ছৃঙ্খল কর্মী-কর্মচারীরা কারখানাতে যেকোনো ধরনের নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে। যার কারণে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে ১১ মার্চ হতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করল।’
অপরদিকে, গত শনিবার মৌচাকের গ্লোবাস কারখানায় কয়েকজন শ্রমিককে ডেকে নিয়ে মারধর করেন কর্মচারীরা। এরপর শ্রমিকরা কারখানার ভেতর আন্দোলন শুরু করেন। পরে ঝামেলা মিটে গেলেও আজ পর্যন্ত কারখানা বন্ধ রয়েছে। গতকালের মারধরের ঘটনায় মহাসড়ক অবরোধ করে আজ বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। তাদের আন্দোলনের ফলে আশপাশের অন্তত ১৫টি কারখানা ছুটি দেওয়া হয়েছে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, সকাল ৭টা থেকে শ্রমিকরা গত মাসের বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করছে। মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকদের বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা চলছে।