মানিকগঞ্জে সূর্যমুখী চাষে সাফল্য, মুগ্ধ দর্শনার্থীরা

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের রাজৈর এলাকায় ধলেশ্বরী নদীর তীর ঘেঁষে রয়েছে বিস্তীর্ণ সূর্যমুখীর বাগান। এক নজরেই চোখ ধাঁধানো এই হলুদ ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। আর এই অপরূপ দৃশ্যের নেপথ্যে রয়েছেন চাষী নিজাম উদ্দিন, যিনি টানা তৃতীয়বারের মতো সূর্যমুখী চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুসারে, সূর্যমুখী চাষে বিঘা প্রতি খরচ হয় আট থেকে নয় হাজার টাকা, আর ভালো ফলন হলে সাত থেকে আট মণ বীজ পাওয়া যায়। এই বীজ থেকে উৎপাদিত তেলের বাজারদরও বেশ ভালো, ফলে চাষিরা দ্বিগুণেরও বেশি লাভবান হন।
সূর্যমুখী ফুল চাষী নিজাম উদ্দিন জানান, এবার তিন বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করতে তার প্রায় ২০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। তবে আশানুরূপ ফলন পাওয়ায় তিনি তিনগুণ লাভের আশা করছেন। অন্য ফসলের তুলনায় সূর্যমুখী চাষ অধিক লাভজনক হওয়ায় এবং কৃষি অফিসের সহায়তায় ভালো ফলন হওয়ায় তিনি বেশ সন্তুষ্ট।
নিজাম উদ্দিন বলেন, ফুল ফোটার পর থেকেই দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা ভিড় জমাচ্ছেন। দুপুরের পর থেকেই ক্ষেতজুড়ে নানা বয়সী মানুষের মিলনমেলা বসে। ধলেশ্বরী নদীর তীরবর্তী হওয়ায় সূর্যমুখীর এই ক্ষেত এখন সৌন্দর্য প্রেমীদের আকর্ষণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। তবে ক্ষেতের ক্ষতি এড়াতে দর্শনার্থীদের সচেতন করা হচ্ছে।
রাজৈর এলাকার খেয়াঘাটের ভ্যানচালক আলী হোসেন জানান, বিকেল হলেই সূর্যমুখী বাগানে মানুষের ঢল নামে। রমজানের কারণে দর্শনার্থীর সংখ্যা কিছুটা কম থাকলেও ঈদের সময় জমজমাট ভিড় হবে বলে তিনি আশা করছেন।
এ বিষয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল কাদের জানান, সূর্যমুখী একটি লাভজনক ফসল এবং এর তেল পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। এটি ভোজ্য তেলের ঘাটতি পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। ভবিষ্যতে এই অঞ্চলে সূর্যমুখী চাষ আরও সম্প্রসারিত হবে বলে তিনি আশা করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ বছর সাটুরিয়ায় ২২ জন কৃষক তিন হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছেন। কৃষি বিভাগের সহায়তায় ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বাম্পার ফলন হয়েছে এবং লক্ষ্যমাত্রা ছয় থেকে সাত মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চাষিরা উল্লেখযোগ্যভাবে লাভবান হবে বলে তিনি মনে করেন।