রোহিঙ্গা ডেটাবেইস ইসিকে ব্যবহারে সম্মত ইউএনএইচসিআর

মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিকসহ ডেটাবেইস রয়েছে ইউনাইটেড নেশনস হাইকমিশনার ফর রিফিউজিস (ইউএনএইচসিআর)-এর কাছে। সেই ডেটাবেইস নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করতে দিতে সম্মত হয়েছে ইউএনএইচসিআর। বুধবার (১৯ মার্চ) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর।
এএসএম হুমায়ুন কবীর বলেন, ইউএনএইচসিআর-এর কাছে যে তথ্য আছে সেটা আমরা এবং সরকারও চাচ্ছে। সরকারের সঙ্গে তাদের একটা সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। সে অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের তথ্য শেয়ার করতে সম্মত হয়েছে। এই ডাটা আমরা কীভাবে পেতে পারি তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে। এই তথ্য আমাদের কাছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, না অন্য কোথাও থাকবে, এটা নিয়ে সরকারের একটা সিদ্ধান্তের ব্যাপার ছিল। এটা চূড়ান্ত হয়েছে যে এটা নির্বাচন কমিশনে (ইসি) থাকবে। কীভাবে, কোথায়, কখন ব্যবহার করতে হবে এটা নিয়ে আরো বসতে হবে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী একটা টেকনিক্যাল টিম করা হয়েছে।
এনআইডি মহাপরিচালক বলেন, নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। রোহিঙ্গারা আমাদের সিস্টেমে প্রবেশ করার চেষ্টা করছে। যত দ্রুত এই ডাটা পাব তত সুবিধা হবে। আমাদের সুবিধা বহুমাত্রিক। রোহিঙ্গাদের ঠেকাতে আর এতো কষ্ট করতে হবে না। কেননা, আমরা ওই ডাটার সঙ্গে মিলে গেলেই তো আমরা বুঝবো রোহিঙ্গা। সুতরাং এটা আমাদের প্রথমেই কাজে লাগবে। তাদের সঙ্গে বৈঠকে পাসপোর্টের বিষয়টাও আলোচনা এসেছে। পাসপোর্ট আমাদের এনআইডি ব্যবহার করে। যদি এনআইডিকে আমরা ক্লিন করতে পারি, রোহিঙ্গা নেই এটা যদি নিশ্চিত করতে পারি এটা উনাদের জন্য (পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষ) কমফরটেবল হবে।
এই ডাটাবেইস পেলে ইতোমধ্যে রোহিঙ্গারা সার্ভারে ঢুকেছে কিনা, তা কী শনাক্ত করার উদ্যোগ নেবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে এএসএম হুমায়ুন কবীর বলেন, ডেফিনেটলি। প্রথম হচ্ছে শনাক্ত করা, শনাক্ত করার সাথে সাথেই তো আমরা এগুলো (এনআইডি) লক করে দেবো। আমরা জানবার বা বুঝবার পরপর লক হয়ে যাবে। তারা তো আমাদের নাগরিক নয়। সুতরাং জানবার সঙ্গে সঙ্গে লক হয়ে যাবে। একজন থাকলেও তো বাদ দিতে হবে।
ডেটাবেইসে কতজন রোহিঙ্গা রয়েছে? জানতে চাইলে এএসএম হুমায়ুন কবীর বলেন, ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আছে বলে উনারা জানিয়েছেন।
কতদিনের মধ্যে ডেটাবেইস পাওয়া যাবে? জানতে চাইলে এনআইডির মহাপরিচালক বলেন, আমরা অনুরোধ করেছি ইমিডিয়েটলি দরকার। উনারা সম্মত হয়েছেন, তবে অনেকগুলো বৈঠক করা লাগবে। পরস্পরকে বুঝতে একটু সময় লাগবে। ডাটাটা এমনভাবে দেবে যেন রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করতে পারি। কাজেই পুরো ডাটা যদি না পাই, সেটা তো পারবো না।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে এএসএম হুমায়ুন কবীর বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় এরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কাজেই এটা আর চট্টগ্রাম অঞ্চলে সীমাবদ্ধ নেই।
তাহলে নতুন ভোটার হতে গেলে সব ভোটারের তথ্য রোহিঙ্গাদের ডেটাবেইসে মেলানো হবে? জানতে চাইলে এএসএম হুমায়ুন কবীর বলেন, আমার বাবা-মায়ের তথ্য তো সার্ভারে আছে। কাজেই আমি ভোটার হতে এলে আর চেক করার দরকার নেই। আমার মনে হয় এটি সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে আরও সময় লাগবে।