১০ টাকা করে দিয়ে ৬০০ পরিবার খেলো পান্তা-ইলিশ

শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সামাজিকতায় সমৃদ্ধ একটি গ্রাম বুরুয়া। গ্রামটি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নে অবস্থিত। এই গ্রামটিতে বসবাস করছে প্রায় ৬০০ পরিবার। প্রতি পরিবার থেকে ১ কেজি চাল ও ১০ টাকা করে চাঁদা তুলে চৈত্র সংক্রান্তি ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে গ্রামবাসী।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন আজ মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে পান্তা ইলিশের আয়োজন করা হয়। এর আগে, সকালে বের হয় একটি বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি বুরুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু হয়ে কালিগঞ্জ বাজার ঘুরে পুনরায় বিদ্যালয় চত্বরে এসে পান্তা ইলিশ খাওয়ার অনুষ্ঠানে মিলিত হয়।
বুরুয়া গ্রামে অনুষ্ঠিত চৈত্র সংক্রান্তি ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আয়োজন কমিটির সভাপতি শংকর দত্ত শোভাযাত্রাটির উদ্বোধন করেন। এ সময় আয়োজন কমিটির সাধারণ সম্পাদক মঙ্গল চন্দ্র ফলিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক তাপস বাড়ৈসহ গ্রামটির সকল বয়সের নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
বুরুয়া গ্রামের কলেজছাত্রী রিপা বাড়ৈ বলেন, সকালে আমরা বর্ষবরণের শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে এখানে এসে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পান্তা ইলিশ খেলাম। অনেকদিন পরে আমরা গ্রামবাসী একসাথে বর্ষবরণ উপলক্ষে একসঙ্গে মিলিত হলাম। এতে আমাদের সামাজিক ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত হয়েছে। আমরা চাই, প্রতিবছর গ্রামবাসী এভাবে একত্রিত হয়ে চৈত্র সংক্রান্তি ও বাংলা নববর্ষ পালন করুক।
আয়োজন কমিটির সাধারণ সম্পাদক মঙ্গল চন্দ্র ফলিয়া বলেন, আমরা বাংলা পঞ্জিকানুযায়ী চৈত্র সংক্রান্তি ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। গতকাল সোমবার প্রথমদিন চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে ছিল চিড়া-দই খাওয়া ও বাউল গান। আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা শেষে আমরা একসাথে সবাই মিলে পান্তা-ইলিশ খেয়েছি। এই পান্তা-ইলিশ খাওয়ার জন্য গ্রামের প্রতিটি ঘর থেকে ১০ টাকা চাঁদা ও ১ কেজি করে চাল তোলা হয়। তা দিয়েই এই পান্তা-ইলিশের আয়োজন করা হয়। আজ সন্ধ্যায় দেশবরেণ্য শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। তবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য এই গ্রামের চাকরিজীবী যুব সমাজ সহযোগিতা করেছেন।

আয়োজন কমিটির সভাপতি শংকর দত্ত বলেন, আমরা এই পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে এখানে দুই হাজার লোকের পান্তা-ইলিশ খাওয়ার আয়োজন করেছি। তবে শেষ পর্যন্ত আমাদের এই সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে। সবাই আনন্দ-উৎসাহের মধ্যদিয়ে এই পান্তা-ইলিশ খেয়েছে। আমরা এই আয়োজন ধরে রাখার চেষ্টা করবো।