মুন্সীগঞ্জে সাংবাদিকের ওপর হামলা, আদালতে মামলা

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলার রশুনিয়া গ্রামে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সাংবাদিক আনিসুর রহমান বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বাদী হয়ে মুন্সীগঞ্জ আমলি আদালত-২-এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত শারমিনের আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার বিষয়টি আদালতের বেঞ্চ সহকারী (পেসকার) ফরিদ হোসেন নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, সিরাজদীখান উপজেলার রসুনিয়া গ্রামের প্রয়াত আব্দুল মান্নানের ছেলে শাহজালাল খান কবিরাজ দীর্ঘদিন ধরে কবিরাজি চিকিৎসা ও জিন ছাড়ানোর নামে অপচিকিৎসা দিয়ে আসছেন। এছাড়া নারীদের বাড়িতে রেখে চিকিৎসার নামে তাদের নিয়ে নাচ গানের ভিডিও তার বিরুদ্ধে ভাইরাল হয়েছে।
এ ধরনের ঘটনা নিয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিকসহ কয়েকজন বিভিন্ন সংবাদপত্রে নিউজ প্রকাশ করলে গত বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সিরাজদীখানের নিমতলা থেকে বাড়ি ফেরার পথে শাহজালাল কবিরাজসহ কয়েকজন তার ওপর হামলা চালিয়ে মাথায় আঘাত করে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী সাংবাদিক আনিসুর রহমান বলেন, তিনি শাহজালাল কবিরাজের অপকর্ম নিয়ে অনেকগুলো নিউজ করেছেন। নিউজ করায় শাহজালাল তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছিল। বুধবার নিমতলায় একটি নিউজের কাজে গেলে ফেরার পথে শাহজালাল ও তার সহযোগীরা তার ওপর হামলা চালায় এবং রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়। তিনি বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেছেন।
স্থানীয়রা জানায়, শাহজালাল কবিরাজ আগে পল্লী বিদ্যুতের লাইনম্যানের কাজ করতেন এবং মিটার দেওয়ার কথা বলে অনেকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। পরে কবিরাজ বনে গিয়ে নারীদের বাড়িতে রেখে নাচগান করেন এবং প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এর আগে কোরআন শরীফ ছুঁড়ে ফেলায় তার আস্তানা গুঁড়িয়ে দেওয়া হলেও প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় তিনি আবার অপচিকিৎসা দিচ্ছেন। এর আগে সিরাজদীখান থানা পুলিশকে তিনি একটি ল্যাপটপ দিয়ে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে বিতর্কের জন্ম দেন।
এ ব্যাপারে শাহাজালাল কবিরাজ দাবি করেন, তিনি নারীদের নিয়ে নাচগান করে অপচিকিৎসা দেন না এবং কোনো সাংবাদিককে মারধর করেননি। থানায় ল্যাপটপ দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এসপি সাহেব একটি ল্যাপটপ চেয়েছিলেন তাই তিনি উপহার দিয়েছেন। তিনি আগামীতে চেয়ারম্যান নির্বাচন করবেন।
এ ব্যাপারে সিরাজদীখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহেদ আল-মামুন বলেন, সাংবাদিকের ওপর হামলার বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।