‘খাতা না দেখানোয়’ এসএসসি পরীক্ষার্থীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে সহপাঠীদের ‘খাতা না দেখানোয়’ ইমন (১৭) নামের এক পরীক্ষার্থীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকালে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়।
নিহত ইমন খুকনী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিহত ইমনের বড় ভাই আরাফাত, চাচা শহিদুল এবং স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) এনায়েতপুর ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা চলাকালে কমন না পড়ায় সহপাঠীরা ইমনের খাতা দেখে লিখতে চায়। ইমন খাতা না দেখানোয় পরীক্ষা শেষে মারপিট করে সহপাঠীরা। তবে বিষয়টি বাড়িতে এসেস জানায়নি ইমন। পরদিন শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে ইমনের দুই সহপাঠী রাব্বি এবং রাজিম বাড়ি থেকে তাকে ডেকে নিয়ে যায়।
ওইদিন বিকেলে ইমনকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে বাসায় ফোন দিয়ে জানানো হয়, ইমনের অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। এসময় স্বজনেরা ইমনকে উদ্ধার করে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অস্ত্রোপচার করে ইমনের মাথার খুলি জোড়া দেওয়া হয়। পরে হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাড়িতে নিয়ে এলে গতকাল শুক্রবার অবস্থার অবনতি হয়। এসময় আবারও হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিয়ে এনায়েতপুর থানা এবং বেলকুচি থানায় গেলেও সীমানা টানাটানিতে মামলা গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ইমনের বড় ভাই আরাফাত ও চাচা শহিদুল।
জানা গেছে, রাব্বি এবং রাজিম নামের দুই সহপাঠী বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গেছে বলে হাসপাতালের প্রেসক্রিপশনে এমন একটি চিরকুট লিখে গেছেন ইমন।
গ্রাম্য প্রধান মো. লাল মিয়া মোল্লা বলেন, মারপিটের ঘটনা শোনার পর আরও গ্রামের লোকজন নিয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান এবং সেখানকার লোকজনকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন ৮-১০ জন মিলে ইমনকে মারপিট করে আহত অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। কিন্তু কেন তাকে মারধর করা হয়েছে সে বিষয়ে তিনি জানেন না।
বিষয়টি নিয়ে এনায়েতপুর থানার ওসি রওশন ইয়াজদানী বলেন, লাশ উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি থানায় না থাকায় বিস্তারিত জানার জন্য সেকেন্ড অফিসার মো. আনোয়ারুলের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। পরে বিষয়টি নিয়ে থানার সেকেন্ড অফিসার মো. আনোয়ারুল ইসালামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান।
বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকেরিয়া হোসেন বলেন, ঘটনা শুরু এবং শেষসহ সার্বিক পর্যালোচনা করে দেখে মামলা গ্রহণ করা হবে। এখনো কেউ মামলা করতে আসেনি।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত রাব্বি এবং রাজিমের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।