অন্ধকারে দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা, জনভোগান্তি চরমে

জাতীয় গ্রিড লাইনে বিপর্যয়ের কারণে একের পর এক উৎপাদনকেন্দ্র বিকল হয়ে যাওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে অন্ধকারাচ্ছন্ন অবস্থায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সেখানকার মানুষ। আজ শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে গোপালগঞ্জের আমিন বাজারে ন্যাশনাল গ্রিডে সমস্যা হওয়ার পর থেকে এই ব্ল্যাক আউট শুরু হয়।
রাত পৌনে ৮টায় সচল হওয়া কয়েকটি উৎপাদনকেন্দ্রের মাধ্যমে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে চাহিদার এক-চতুর্থাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। ফলে বরিশাল নগরীসহ বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সীমিত পরিসরে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হলেও এখনও অন্ধকারে রয়েছে অধিকাংশ জনপদ। এতে করে গরমে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের এক বার্তায় জানা গেছে, বরিশালের সামিট, ইউনাইটেড, পায়রা ও তালতলী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ছাড়াও ভোলার ২২৫ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং গোয়ালপাড়া ও ভেড়ামাড়া গ্রিড সাব-স্টেশনের সঙ্গে যুক্ত বরিশাল ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড সাব-স্টেশনের মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া ৪২৫/১৩২ ও ২২৫/১৩২ গ্রিড সাব-স্টেশনের সাথে একাধিক ৩৩/১১ কেভি সাব-স্টেশনের মাধ্যমে এ অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
কিন্তু আজ বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে আকস্মিকভাবেই প্রথমে গোয়ালপাড়া, পরে ভেড়ামাড়ার পর একে একে সবগুলো গ্রিড লাইনই ট্রিপ করায় বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিপর্যয় হয়। এ পরিস্থিতিতে পিজিসিবি, পিডিবি ও ওজোপাডিকোর প্রকৌশলী ও কর্মীরা ‘অপারেশন ব্লাক আউট’ পদ্ধতিতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে কয়েকটি ছোট উৎপাদন ইউনিট চালু করে সন্ধ্যা ৬টা ৫৭ মিনিটে বরিশাল ১৩২/৩৩ কেভি ও কলাডেমা গ্রিড সাব-স্টেশনগুলোতে স্টেশন লোড পৌঁছে দেন। এরপর বরিশাল নগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের বড় শহরগুলোর গ্রাহকরা সীমিত পরিসরে বিদ্যুতের সুবিধা পান।
রাত পৌনে ৮টায় সচল উৎপাদন কেন্দ্রগুলো থেকে পিজিসিবি বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে চাহিদার এক-চতুর্থাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে। সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে গুমোট গরমের সঙ্গে ঘুটঘুটে অন্ধকারে জনজীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে।
ঝালকাঠির বৃদ্ধ মোবারক আলী বলেন, সন্ধ্যা থেকে বিদ্যুৎ নেই। প্রচণ্ড গরমে অসুস্থবোধ করছি। দ্রুত সমস্যা সমাধান করে বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি জানান তিনি।
বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) সদস্য (বিতরণ ও পরিচালন) আব্দুর রহিম মল্লিক বলেন, বরিশাল নগরী বাদে পুরো জেলাসহ ঝালকাঠি, ফরিদপুর ও রাজবাড়ী জেলার বিদ্যুৎ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এখন ধীরে ধীরে সরবরাহ বাড়ছে।
দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হায়দার আলী বলেন, গোপালগঞ্জের আমিন বাজারে ন্যাশনাল গ্রিডে সমস্যা হওয়ায় এই ব্ল্যাক আউট হয়েছে। তবে ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে এবং বিভিন্ন জেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ করা হচ্ছে। সমস্যার সমাধান হতে আরও কিছু সময় লাগবে।