ছেলের পাশে নাতনির কবর খুঁড়ছেন দাদা
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন মো. জসিম উদ্দিন হাওলাদার। এর প্রায় আট মাস পর শহীদের মেয়ে কলেজছাত্রী মোসা. লমিমা (১৭) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেন। বাবার কবরের পাশেই লামিয়ার কবর খুঁড়ছেন দাদা সোবাহান হাওলাদার।
এমন ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাঙ্গাসিয়া গ্রামে।
এর আগে, গতকাল শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুরে শেখেরটেক এলাকায় ভাড়া বাসায় আত্মহত্যা করেন। পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণের শিকার লামিয়া বিচারহীনতার ভয় ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
লামিয়ার পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ মার্চ শহীদ বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানা বাড়ির ফেরার পথে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে কয়েকজন বখাটে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। পরে ওই ধর্ষণের ঘটনা মোবাইলফোনে ধারণ করে বিষয়টি গোপন রাখার জন্য হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ওই কলেজছাত্রী দুজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। পুলিশ দুজন আসামিকেই গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছেন।
এ ঘটনার পর থেকে শহীদ কন্যা লামিয়া তার মায়ের সঙ্গেই শেখেরটেক এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। গতকাল শনির রাত ১০টার দিকে বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্ত শেষে তার মরদেহ গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা করেছেন স্বজনরা। বিকেল ৫টার দিকে জানাজা শেষে দাফন করা হবে।
লামিয়ার ধর্ষণকারীদের বিচার দাবি করে দাদা সোবহান হাওলাদার বলেন, ছেলে দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। নাতি ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এই কষ্ট সহ্য করার মতো না।
এদিকে, লামিয়ার ধর্ষণের ঘটনার পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত তারেক রহমান লন্ডন থেকে মোবাইলফোনে খোঁজ-খবর নিয়েছেন। এছাড়াও, এনসিপির প্রতিনিধি দল লামিয়ার বাড়িতে এসে খোঁজ খবর নিয়েছিলেন।
আজ রোববার লামিয়ার জানাজায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির হোসেন বলেন, লামিয়াকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি সিফাত ও সাকিবকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। সুবিচার নিশ্চিত করতে পুলিশ কাজ করছেন।