চিকিৎসক না পেয়ে জরুরি বিভাগে ভাঙচুর, হাসপাতালে সেবা বন্ধ

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসককে না পেয়ে জরুরি বিভাগে ভাঙচুর ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার (৩ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা জানান, সদরের মাগুরা গ্রামের শাহীন (২৫) নামের এক রোগী সকালে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়ে ইনডোরে ভর্তি হন। সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসককে না পেয়ে রোগীর স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে তারা ফের জরুরি বিভাগে গিয়ে কর্তব্যরত স্টাফদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, বাগবিতণ্ডার সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি সোহেল আহমেদ মানিকের নেতৃত্বে স্টাফদের ওপর হামলা হয় এবং হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি সোহেল আহমেদ মানিকের নেতৃত্বে জরুরি বিভাগে হামলা চালানো হয়। এতে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। বর্তমানে জরুরি বিভাগে সেবা দেওয়ার মতো পরিবেশ নেই।’
অভিযোগ অস্বীকার করে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সোহেল আহমেদ মানিক বলেন, ‘শহরের মাগুরা এলাকায় দুই বন্ধু মারামারি করে একজন সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন। বেলা পৌনে এগারোটার দিকে ওই রোগীকে দেখতে হাসপাতালে যাই। গিয়ে দেখি রোগীর খিঁচুনি, বমি ও ব্লিডিং হচ্ছে, অথচ ডাক্তার নেই। ডাক্তারের খোঁজ করলে রোগীকে বাইরে নিয়ে যেতে বলা হয়। পরে রোগীকে বাইরে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করি। তাকে অ্যাম্বুলেন্সে ওঠানোর সময় রোগীর স্বজনরা জরুরি বিভাগে ভাঙচুর করে। আমি কোনো ধরনের হামলার সঙ্গে জড়িত নই।’
এঘটনা নজরে এলে তাৎক্ষণিক অভিযুক্ত সোহেল আহমেদ মানিককে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। শনিবার বিকেলে সোহেল আহমেদ মানিককে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই বহিষ্কারাদেশ পাঠানো হয়েছে।
রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত ওই পত্রে বলা হয়, ‘সাতক্ষীরার একজন দায়িত্বশীল নেতা হয়েও আপনি দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি ও একজন স্কুল শিক্ষকের সঙ্গে অসাধাচরণসহ নানা সংঘাতমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে আপনাকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে নির্দেশক্রমে বহিস্কার করা হলো।’
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামিনুল হক বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে থানায় অভিযোগ দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. মো. আ. সালাম বলেন, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে। হামলা ও ভাঙচুরের কারণে বন্ধ হওয়া জরুরি বিভাগ দ্রুত চালুর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।