আওয়ামী লীগে যোগ না দিলে সাকিব বিপদে পড়তো না : মেজর হাফিজ

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ না দিলে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ‘বিপদে পড়তো না’। তিনি বলেন, ‘যদি সে আমার কথা শুনতো এবং এভাবে রাজনীতিতে না আসতো, এই ধরনের ডামি ইলেকশনে না যেতো, আজকে সে অনেক সম্মানের সঙ্গে ঢাকার রাজপথে বিচরণ করতে পারতো।’
আজ শনিবার (৩ মে) সকালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশন’র আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান সস্পর্কে এসব কথা বলেন মেজর (অব.) হাফিজ।
জাতীয়তাবাদী ঘরানার ক্রীড়া সংগঠকদের সমন্বয়ে গঠিত ‘বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশন’ দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার দাবি নিয়ে আত্মপ্রকাশ করল। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করা ক্রিকেটার তামিম ইকবাল। তামিমের উদ্দেশ্যেও রাজনীতির বিষয়ে সর্তক থাকতে বলেন হাফিজ উদ্দিন।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘সাকিব আল হাসান আমার বাসায় এলে এক ফাঁকে তাকে একটা উপদেশ দিয়েছিলাম। আমি সাকিব আল হাসানকে বলেছিলাম, যা করো না করো আওয়ামী লীগ কোনোদিন করবে না। এটা শুনে সে একটু বিমর্ষ হলো। তার ধারণা আওয়ামী লীগে গেলে মন্ত্রী হবে এটা হবে ওটা হবে, এমপি তো হবেই। অথচ আমার এই উপদেশ না শুনে সে বিপদে পড়েছে।’
আশির দশকে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার আগে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় ছিলেন। নিজের খেলোয়াড়ি জীবনের কথা সাকিব আল হাসানকে মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি সাকিবকে বললাম, আমিও তোমার মতো খেলোয়াড় ছিলাম, আমাদেরও পরিচিতি ছিল। একসময় পাকিস্তান জাতীয় দলে একাই আমি বাঙালি ছিলাম। অনেক সুযোগ-সুবিধা নিতে পারতাম আমি। কিন্তু খেলোয়াড় থাকা অবস্থায় রাজনীতিতে যোগদান করা, এটি আমার মনঃপূত হয়নি।’
মেজর (অব.) হাফিজ বলেন, ‘অনুষ্ঠানে আরও যারা তারকা ক্রিকেটার, ফুটবলার, হকি প্লেয়ার আছেন, বিশেষ করে তামিম ইকবালকে বলব, তার যথেষ্ট নাম হয়েছে, তার স্টাইল অব ব্যাটিং আমার খুবই পছন্দ। এই ধরনের আক্রমণাত্মক প্লেয়ার আর তো দেখা যায় না। তাকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড হ্যান্ডেলিং করতে পারেনি। যার জন্য মানসিকভাবে খেলার আগে বিড়ম্বিত ছিল সময়ের আগেই কোনো কোনো ফরম্যাট থেকে রিটায়ার্ড করেছে।’
এ সময় আওয়ামী লীগ ‘দলীয়করণ ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্রীড়া সংগঠন’ তৈরি করে ক্রীড়াঙ্গনকে কলুষিত করেছে উল্লেখ করেন মেজর (অব.) হাফিজ। তিনি বলেন, ‘ক্রীড়াঙ্গন একটি অন্য ধরনের অঙ্গন। রাজনীতি থেকে অনেক দূরের। ক্রীড়াঙ্গনে যারা রথী-মহারথী, যারা সময় দেন, তাদের হৃদয় অন্য রকম, ব্যঞ্জনা অন্য রকম। মন মানসিকতা অন্য রকম। রাজনীতিবিদদের সঙ্গে ক্রীড়াবিদদের মনমানসিকতার অনেক তফাৎ রয়েছে। আমি কখনোই চিন্তা করি নাই রাজনীতি করব।’
অনুষ্ঠানে বিএনপিনেতা আবদুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, আমিনুল হক, শরীফুল আলম ও ইশরাক হোসেন বক্তব্য দেন।