তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর জামিন আবেদন খারিজ

জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আজ বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আজ এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ট্রাইব্যুনালে শুনানিতে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আজিজুর রহমান ও প্রসিকিউটরের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।
আসামির আইনজীবী শুনানিতে বলেন, আমরা এখনও ‘কপি অব অ্যালিগেশন’ পাইনি। ফলে আমরা জানি না যে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী কবে, কোথায়, কখন, কাকে হত্যা করেছেন বা হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। তা ছাড়া এই আসামির বয়স ৭০ বছরের বেশি। তিনি নানা রোগে ভুগছেন। এ অবস্থায় তাঁর জামিন প্রয়োজন।
শুনানিতে তাজুল ইসলাম বলেন, এই আসামিকে ‘প্রাইমারি অ্যালিগেশন’ দেওয়া হয়েছে। সেখানে উল্লেখ আছে, তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় দেশব্যাপী সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ছিলেন। ফলে সেই প্রধানমন্ত্রীর কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর দায় আছে। তাঁর দায় ‘কমান্ড রেসপনসিবিলিটি’ পর্যায়ের। এই মামলায় তাঁর জামিন অচিন্তনীয়। ফরমাল চার্জ গঠন হলে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর অভিযোগ সম্পর্কে জানা যাবে। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার অনেক আসামি পালিয়েছেন। ইন্টারপোল ও বন্দিবিনিময় চুক্তির মাধ্যমেও তাঁদের আনা যাচ্ছে না। তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীকে জামিন দিলে তিনিও মুহূর্তের মধ্যে হাওয়া হয়ে যেতে পারেন।
অভিযোগ সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে জানার জন্য মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত আসামিপক্ষকে অপেক্ষা করতে বলেন ট্রাইব্যুনাল। শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল বলেন, চিকিৎসকের নথিপত্রে এমন কিছু নেই, যে কারণে তাঁর জীবন হুমকির মুখে। বয়স হিসেবে তিনি ভালো আছেন। শুনানি নিয়ে ট্রাইব্যুনাল তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।
এর আগে গত বছরের ১৭ অক্টোবর জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে পৃথক মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে আলাদাভাবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় তৌফিক এলাহি চৌধুরীও আসামি।