১৪ গ্রামের মানুষের বাঁশের সাঁকোয় ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার

স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পার হলেও এখনও সেতু হয়নি পাবনার চাটমোহর উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের বহরমপুর-মির্জাপুরে নদীর ঘাটে। ফলে করতোয়া নদীর ওপর বাঁশের নড়বড়ে সাঁকো কিংবা খেয়া নৌকা, এসব ঝুঁকিপূর্ণ উপায়ে প্রতিদিন যাতায়াত করছেন অন্তত ১৪টি গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ।
বর্ষায় প্রায় সাত-আট মাস খেয়া নৌকা, আর শীতকালে নদীর ওপর অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো, এগুলোই পারাপারের একমাত্র উপায়। শিশু, বৃদ্ধ, রোগী, গর্ভবতী নারী, শিক্ষার্থী কিংবা কর্মজীবীদের জন্য এ যাত্রা যেন প্রতিদিনের একটি জীবনযুদ্ধ।
নদীর পশ্চিম পাড়ে বহরমপুর, মামাখালী, বিন্যাবাড়ি, গৌড়নগর, করকোলা, বরদানগর ও চিনাভাতকুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম এবং পূর্ব পাড়ে মির্জাপুর, নিমাইচড়া, গৌড়িপুর গ্রামগুলোতে রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ, মির্জাপুর ডিগ্রি কলেজ, স্কুল, মাদরাসা, ব্যাংক, ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও গুরুত্বপূর্ণ হাটবাজার। এসব স্থানে পৌঁছাতে প্রতিদিন হাজারো মানুষকে এই ঝুঁকিপূর্ণ নদী পারাপার করতে হয়। বর্ষাকালে যখন নদীতে পানি থাকে, তখন খেয়া নৌকাই ভরসা।
মামাখালী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহিম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, বর্ষায় নদী ভরা থাকলে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই খেয়া নৌকায় পার হতে হয়। কখনও কখনও ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় নৌকার জন্য। আবার শীতকালে যখন বাঁশের সাঁকো বানানো হয়, সেটা এতই দুর্বল থাকে যে পার হতে গেলে ভয় করে। অসুস্থ রোগী, গর্ভবতী নারী কিংবা শিশুদের নিয়ে পার হওয়াটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

বহরমপুর গ্রামের আজমত আলী বলেন, করতোয়া নদীর ওপর সেতু না থাকায় প্রতিদিন কষ্ট করে পার হতে হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদ, কলেজ, ভূমি অফিস কিংবা হাটে যেতে গেলে সময় নষ্ট হয়, কষ্টও হয়। শিক্ষার্থীরা প্রায়ই ক্লাস মিস করে। তাই আমরা অবিলম্বে একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানাই।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, একবিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশে এখনও বাঁশের সাঁকো যদি যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হয়, তবে তা শুধু হতাশাজনকই নয়, বরং সরকারের অবহেলারও প্রতিচ্ছবি।
চাটমোহর উপজেলা প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘দ্রুত খোঁজ নিয়ে সরেজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমরা আশা করছি, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে দ্রুত সেতু নির্মিত হবে।’

স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) পাবনা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে প্রকল্প কম গ্রহণ করা হচ্ছে। তবে যেহেতু বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ, তাই এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করা হবে।’