আলোচিত এমপি আনার হত্যার এক বছরেও হয়নি বিচার

ঝিনাইদহ-৪ আসনের (কালীগঞ্জ ও সদরের একাংশ) সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের নিখোঁজ ও হত্যার এক বছর পূর্ণ হলো আজ (১৩ মে)। কিন্তু এখনও তার হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি, হয়নি জানাজাও।
২০২৪ সালের ১২ মে চিকিৎসার উদ্দেশে ভারতের কলকাতায় যান এমপি আনার। সেদিন তিনি বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। ১৩ মে সেখান থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। এরপর ১৯ মে তার কনিষ্ঠ কন্যা মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন ঢাকার মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে বাবার নিখোঁজ হওয়ার তথ্য দেন এবং শেরেবাংলা নগর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।
২২ মে কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেনের বিউ-৫৬ নম্বর ফ্ল্যাট থেকে একটি দেহাংশের আলামত উদ্ধার করে কলকাতা পুলিশ। পরবর্তীতে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির প্রধান অখিলেশ চতুর্বেদী গণমাধ্যমে এমপি আনার হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ওই সময় চেয়ারে বসানো, হাত-পা বাঁধা, মুখ কাপড় দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়, যা নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। এরপর কসাই জিহাদকে সঙ্গে নিয়ে বাগজোলা খাল থেকে হাড় ও ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংক থেকে ৪ কেজি মাংসের টুকরাও উদ্ধার করা হয়।
২০২৪ সালের নভেম্বরের শেষ দিকে ডিএনএ নমুনা দেওয়ার জন্য এমপি আনারের স্ত্রী ইয়াসমিন ফেরদৌস, ভাই এনামুল হক ও মেয়ে মুমতারিন ডরিনকে কলকাতায় ডাকা হয়। তবে কেবল ডরিনই সেখানে যান। পরে ২০ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি নিশ্চিত করে উদ্ধার হওয়া মাংসের সঙ্গে ডরিনের ডিএনএ মিলেছে এবং এমপি আনার হত্যার শিকার হয়েছেন। একই তথ্য নিশ্চিত করে কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস।
এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকা থেকে আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, তানভির ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমান; খাগড়াছড়ি থেকে ফয়সাল ও মুস্তফিজ; ঝিনাইদহ থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু ও গ্যাস বাবু এবং কলকাতা থেকে কসাই জিহাদ ও সিয়ামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান শাহীন এখনও পলাতক।
এত আলোচিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডের পরও এখনও কোনো গায়েবানা জানাজা বা ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা হয়নি।